দুর্দান্ত, দুর্দমনীয়, ঐতিহাসিক- আফগানিস্তানকে এখন যে বিশেষণেই বিশেষায়িত করা হোক না কেন, সেটাই বোধহয় কম হয়ে যাবে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে উঠেছে রশিদ খানের দল। সেটাও আবার এমন এক গ্রুপ থেকে, যেখানে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার মতো প্রতিপক্ষ ছিল। অবশ্য ভারত তিন ম্যাচ জিতে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে আগেই। লড়াইটা ছিল অস্ট্রেলিয়া আর আফগানিস্তানের মধ্যে।
বাংলাদেশও ছিল, সমীকরণের প্যাঁচে আজ ম্যাচের দুই-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত সেমিফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল বাংলাদেশের। তবে সে হিসেব মেলানো তো দূর, বাংলাদেশ হেরেই গেছে। বাংলাদেশকে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছে আফগানিস্তান!
এর আগে মুখোমুখি দেখায় অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে নিজেদের শক্তির প্রমাণ দিয়েছিল আফগানরা। গতকাল ভারতের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়া আবারও হেরে যাওয়ায় সেমির টিকিট পেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে কেবল জিতলেই চলত বাংলাদেশের। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে আফগানরা করতে পারল মোটে ১১৫ রান।
স্বল্প সংগ্রহ দিয়েই বুক চিতিয়ে লড়লেন আফগানরা। আর তাতেই শেষ পর্যন্ত বৃষ্টি আইনে বাংলাদেশকে ৮ রানে হারিয়ে ইতিহাস লিখলেন রশিদ-নবীরা। বাংলাদেশ তো বটেই, অস্ট্রেলিয়ার স্বপ্নও ভেঙেছে আফগানিস্তান।
আফগানিস্তানের এ ঐতিহাসিক অর্জনে স্বাভাবিকভাবেই প্রশংসার জোয়ারে ভাসছেন রশিদ খানেরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে চলছে আফগান বন্দনা। সেখানে আফগানদের প্রশংসায় মেতে উঠেছেন সমর্থক থেকে শুরু করে সাবেক ক্রিকেটাররাও। পিছিয়ে নেই আইপিএলের দলগুলোও। আফগানিস্তানের সেমিতে যাওয়াকে নতুন যুগের সূচনা বলছেন অনেকেই।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটারে) ভারতের সাবেক ক্রিকেটার বীরেন্দর শেবাগ বলেছেন, ‘ওয়াও, আফগানিস্তান। কী দারুণভাবে সবটুকু নিয়ে ঝাঁপিয়েছে ওরা! নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছে। একেই বলে উন্নতি। অভিনন্দন।’
আইপিএলের দল দিল্লি ক্যাপিটালসের টুইটার পেজ থেকে দুটি ছবির কোলাজ শেয়ার করা হয়েছে। এখানে একটি ছবিতে লেখা, ‘২০০৮- বিশ্ব ক্রিকেট লিগের পঞ্চম ডিভিশনে খেলত।’ অন্য ছবিতে দেওয়া, ‘২০২৪- বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছে।’ এই দুটি ছবির কোলাজে ক্যাপশনে দিল্লি লিখেছে, ‘ক্রিকেট ইতিহাসে সেরা আন্ডারডগ। আফগানিস্তান ক্রিকেটে নাম লেখাতে এসেছে।’
আইপিএলের আরেক দল চেন্নাইয়ের পক্ষ থেকে আফগানিস্তানকে শুভেচ্ছা জানিয়ে লেখা হয়েছে, ‘ইতিহাস মনে রাখবে! আফগানিস্তান আসছে!’
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু লিখেছে, ‘ইতিহাস এই দিনটাকে মনে রাখবে। নতুন যুগের সূচনায় আফগানিস্তানকে অভিনন্দন। যোগ্য সেমিফাইনালিস্ট।’