২০০৬ সালে ওয়ানডেতে মাশরাফি বিন মুর্তজা যখন ৪৯ উইকেট নিয়ে সে বছরের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হলেন, তাঁর পেছনেই ছিলেন ন্যাথান ব্র্যাকেন। লম্বা বাদামি চুল, মাঠে নামার সময় ব্যান্ড দিয়ে আটকে রাখতেন ওপরের অংশ, যাতে চুল মুখের সামনে এসে না পড়ে। বলটাকে বাতাসে দুই দিকেই সুইং করানোর দারুণ ক্ষমতা ছিল, যে কারণে তাঁকে খেলতে বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানদেরও ভোগান্তি পোহাতে হতো।
এমনই ক্ষুরধার তাঁর বোলিং ছিল যে, ২০০৬ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে গ্লেন ম্যাকগ্রাকে পরে বোলিংয়ে এনে বোলিং উদ্বোধনের দায়িত্বটা ব্র্যাকেনকেই দেয় অস্ট্রেলিয়া। ২০০৮ সালে ওয়ানডের বোলারদের র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষেও উঠেছিলেন।
তা হঠাৎ এতদিন পর তাঁর কথা আলোচনায় আসছে আজ শুধু তাঁর ৪৭তম জন্মদিন বলেই নয়! তাঁকে নিয়ে এক প্রতিবেদন করেছে ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি, যেখানে জানানো হচ্ছে – ব্র্যাকেন এখন অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসে কাজ করছেন একজন অ্যাকাউন্টস ম্যানেজার হিসেবে।
খেলা ছাড়ার পর সবার তো কোচিং বা ধারাভাষ্যে যাওয়া হয় না। এখন আবার ইউটিউব চ্যানেল খুলেও কেউ আলোচনায় থাকেন। তবে এর বাইরেও কেউ থাকেন, যাঁরা হারিয়ে যান। কেউ চলে যান অন্তরালে। ব্র্যাকেন তেমনই একজন।
২০১১ সালে অবসরে চলে যাওয়া ব্র্যাকেন মাঝে কিছুদিন রাজনীতিতেও জড়িয়েছিলেন। ২০২৩ সালে লিবারেল প্রার্থী হিসেবে লড়েছিলেন ‘দ্য এন্ট্রান্স ইলেক্টরেটে।’ তবে সেখানেও জমেনি। এখন কাজ করছেন অ্যাকাউন্টস ম্যানেজার হিসেবে।
ক্যারিয়ারজুড়ে চোটের পর চোট দেখা ব্র্যাকেন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টেস্ট সেভাবে খেলার সুযোগ পাননি – মাত্র ৫টি টেস্টই খেলেছেন। ওয়ানডেই তাঁর সেরা রূপটা দেখেছে – ১১৬ ম্যাচে নিয়েছেন ১৭৪ উইকেট। টি-টোয়েন্টিতে ১৯ ম্যাচে ১৯ উইকেট নিয়েছেন।
তবে ২০১১ সালে ক্যারিয়ারের শেষ টেনে দেওয়া ব্র্যাকেন এর আগে আলোচনায় ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা (ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া) সমালোচনা করেও। তাঁর দাবি ছিল, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার কারণেই তাঁর ক্যারিয়ার এত তাড়াতাড়ি শেষ হয়েছে। ২০১২ সালে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া ও সংগঠনটির তিন চিকিৎসাবিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন ব্র্যাকেন, যেখানে তাঁর দাবি ছিল – ২০০৭ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একটা ওয়ানডের আগে তাঁর ডান হাঁটুতে চোটটা ঠিকভাবে ‘পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা’ করা হয়নি।