আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আফগানিস্তানের এ বছরটা ছিল ইতিহাস লেখার। গত জুনে যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে উঠেছিল আফগানরা। আইসিসির কোনো ইভেন্টে এটাই দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সাফল্য। শুধু তাই নয়, চলতি বছর খেলা ১৮ টি-টোয়েন্টিতে ৮ হারের বিপরীতে ৯টিতে জিতেছে এশিয়ার দেশটি। টেস্টে (২টেস্ট খেলে দুটোতেই হার) সাফল্য না এলেও ওয়ানডেতেও (১১ ম্যাচে ৫ জয়) জয়ের পাল্লাটা ছিল ভারী। আর এ সাফল্যের পুরোটাই এসেছে কোচ জোনাথন ট্রটের অধীনে।
তবে এ বছর শেষ হতে হতে সাবেক ইংলিশ তারকার সঙ্গে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যেত। কিন্তু এমন সোনার ডিম পাড়া হাঁসকে কে-ই বা হাতছাড়া করতে চাইবে? আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডও (এসিবি) সে পথে হাঁটেনি। ট্রটের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ আরও এক বছরের জন্য বাড়িয়েছে এসিবি। এ নিয়ে দুই দফা মেয়াদ বাড়ানো হলো ট্রটের।
সাবেক ইংলিশ ব্যাটসম্যান ২০২২ সালে ১৮ মাসের জন্য প্রধান কোচ হিসেবে আফগানিস্তানের দায়িত্ব নেন। নিজের প্রথম মেয়াদের একদম শেষ দিকে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে আফগানিস্তানকে নিয়ে চমক দেখান ট্রট। বৈশ্বিক ওই টুর্নামেন্টে ইংল্যান্ড, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকার ৬ নম্বরে থেকে গ্রুপ পর্ব শেষ করে এশিয়ার দেশটি। ওই সাফল্যের জেরে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ট্রটের সঙ্গে আরও ১২ মাসের জন্য চুক্তি নবায়ন করে এসিবি।
এ বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আবার নজরকাড়া সাফল্যের দেখা পান রশিদ খান-মোহাম্মদ নবীরা। গ্রুপপর্বে নিউজিল্যান্ডকে হারানোর পর সুপার এইটে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে দেয় আফগানরা। দেশটির ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বোচ্চ সাফল্য এনে দেওয়ায় ট্রটের ওপরই আস্থা জারি রাখছে এসিবি।
এ মেয়াদে ট্রটের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা হতে যাচ্ছে আগামী বছর হতে যাওয়া চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। তবে নতুন চুক্তি স্বাক্ষরের পর প্রথম সিরিজে দলের সঙ্গে পূর্ণ মেয়াদে থাকবেন না ট্রট। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শুধু ওয়ানডে সিরিজে দলের সঙ্গে থাকবেন তিনি। ব্যক্তিগত কারণে ছুটি নিয়েছেন টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকে। ট্রটের পরিবর্তে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে আফগানদের প্রধান কোচের দায়িত্ব সামলাবেন হামিদ হাসান এবং সহকারী কোচের ভূমিকায় দেখা যাবে নওরোজ মঙ্গলকে।
উল্লেখ্য, ট্রটের অধীনে সবমিলিয়ে ৩৪ ওয়ানডে খেলে ১০টিতে জয় পেয়েছে আফগানিস্তান। এছাড়া টি-টোয়েন্টিতে জিতেছে ২০ ম্যাচ (মোট খেলা ৪৪ ম্যাচ)।