মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পুরো দুনিয়ায় একটা হুলুস্থুল বাঁধিয়ে দিয়েছেন। এমন ক্যাচালই লাগিয়েছেন যে, অন্যান্য দেশ চিঠি লিখতে লিখতে আর ‘স্যার, স্যার’ বলে ট্রাম্পকে ডাকতে ডাকতে নাকি গলা শুকিয়ে ফেলছে। ট্রাম্প নিজেই এমনটা জানিয়েছেন। বোঝাই যাচ্ছে যে, কীভাবে অন্যকে দিয়ে ‘স্যার’ ডাকানো যায়, সে ব্যাপারে ট্রাম্পের ট্রেনিং নেওয়া আছে ভালোই!
নতুন ট্যারিফ নীতি ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করে বেশ লম্বা–চওড়া অনেকগুলো কথা বলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, ‘আমি জানি আমি কী করছি।’ অর্থাৎ, ট্রাম্প নিজেই নিশ্চিত করলেন এর মাধ্যমে যে, উল্টোপাল্টা কাজ তিনি করছেন না। যারা এমনটা বলছে, তাদের দাবি সঠিক নয়।
নতুন শুল্কনীতি পুনর্বিবেচনার জন্য বিভিন্ন দেশ মরিয়া হয়ে উঠেছে বলেও মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ‘আমি আপনাকে বলছি, এই দেশগুলো আমাদের ডাকছে, আমার পা চাটছে। তারা তা করছে। তারা একটি চুক্তি করার জন্য মরিয়া।’ বিশ্বনেতারা চুক্তির জন্য এখন নাকি ট্রাম্পকে ‘স্যার’ বলেও ডাকছেন! বিশ্বনেতারা নাকি আবেদন–নিবেদন করে বলছেন—‘দয়া করে, দয়া করে, স্যার, একটি চুক্তি করুন। আমরা সবকিছু করব। সবকিছু করব, স্যার!’
এই সবকিছু ট্রাম্প নিজেই জানিয়েছেন। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরেই এসব প্রকাশিত হয়েছে। কোনো কোনো সংবাদমাধ্যম আবার ট্রাম্পের বরাত দিয়ে বলছে, বিশ্বনেতারা পা নয়, অন্য কোথায় কি জানি করেছেন! যাই হোক, আসল কথা হলো, ট্রাম্পকে তোয়াজ করা হচ্ছে। ট্রাম্পের দাবি অনুযায়ী, সব বিশ্বনেতারাই করছেন কাজটা। আর এটি করতে গিয়ে বারবার ‘স্যার’ বলেও ডাকছেন।
তাই নাইটহুড পদবী না পেলেও এখন থেকে ট্রাম্প হয়ে যাচ্ছেন ‘স্যার ডোনাল্ড ট্রাম্প’। বিশ্বনেতারাই যেখানে নাইটহুডের খ্যাতা পুড়ে ‘স্যার’ বলে ডাকা শুরু করেই দিয়েছেন, সেখানে ব্রিটিশ রাজ আর কী করবে!
কিন্তু স্যার বলে ডাকলে যে একটা অন্য লেভেলের ভাব শরীরে চলে আসে, এটি ট্রাম্প বুঝলেন কীভাবে? স্যার বলে ডাকলে শরীরে শিহরণ বয়ে যায়, দিলে কারেন্ট মারে—সেটিই কীভাবে বুঝলেন তিনি?
এ নিয়েই কাজ শুরু করে সরস টিম। দিগন্তবিস্তৃত অনুসন্ধান চালিয়ে যা জানা যায়, তা বিশ্বাস করা কঠিন। খুবই কঠিন। তাই কারও বিশ্বাস করাও উচিত হবে না আসলে।
এমনিতেই ঢাকার রাস্তায় এখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের নানা ধরনের ‘বন্ধু’ পাওয়া যাচ্ছে! কেউ কেউ গ্রেপ্তারও হচ্ছে। ফলে ট্রাম্পের বিষয়ে অনুসন্ধান চালানো সহজ হয়ে গেছে কিছুটা। এই তো, কিছুদিন আগেই জানা গেল, ডোনাল্ড ট্রাম্প ঢাকায় ব্যবসা করার জন্য নাকি ট্রেড লাইসেন্স পাওয়ারও আবেদন করেছেন, পেয়েছেনও নাকি! ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা আবার দেওয়া ছিল খালের পাড়ে, আফতাবনগরে।
সুতরাং, অনুমান করাই যায় যে, বাংলাদেশের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি নিবিড় সংযোগ রয়েছে। আর কল্পনা করতে গেলে তো এ দেশে গরুরা আকাশেই ওড়ে!
ঠিক সেই প্রক্রিয়াতেই একটি আষাঢ়ে সূত্র জানায় যে, বাংলাদেশেই নাকি ‘স্যার’ ডাকানোর তরিকা শিখেছিলেন ট্রাম্প! কানে–মুখে শোনা গেছে যে, ট্রাম্প যে ধরনের রাজনীতি করেন বা করতে চান, তার মডেল তৈরিতে নাকি বাংলাদেশের ব্যাপক অবদান। অনেক কিছুই নাকি তিনি এ দেশ থেকে শিখতে পেরেছেন, এক ধরনের কোচিং নাকি করেছিলেন!
বাংলাদেশে এমনিতেই ‘স্যার’ ডাকাটাকে বেশ গুরুত্বের সাথে নেওয়া হয়। যারাই একটু হ্যাডমের অধিকারী হন, তারাই অন্যদের বাধ্য করেন স্যার ডাকতে। এ নিয়ে এ দেশে অনেক তুলকালাম হয়েছে। বিশেষ করে সরকারি কর্মচারী বা আমলা হলে তো, কথাই নেই। আবার সরকারি পিয়ন হলেও রক্ষে নেই। সবাইকেই ‘স্যার’ ডাকতে হয়। নইলে যে ইজ্জত থাকে না। স্যার ডেকে ইজ্জত রক্ষার কোর্সই নাকি করেছিলেন ট্রাম্প!
কিন্তু কোন কোচিং সেন্টারে? স্বাভাবিকভাবেই যেহেতু ঢাকার আফতাবনগরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা দিয়েছিলেন ট্রাম্প, সেহেতু বোঝাই যায় যে, এই শহরেই কোচিং করেছিলেন তিনি। আর ঢাকার মধ্যে ফার্মগেট ছাড়া অন্য কোন জায়গায় ভালো কোচিং সেন্টার আছে, বলুন? আপনারাই একটু ভেবে দেখুন, প্লিজ।
যদিও ফার্মগেটের কোনো কোচিং সেন্টার এ বিষয়ে মুখ খুলতে চায়নি। একটি অনির্ভরযোগ্য সূত্র শুধু এটুকু নিশ্চিত করেছে যে, ফার্মগেট যাওয়ার জন্য হাতিরঝিল পার হতে ওয়াটার ট্যাক্সি ব্যবহার করতেন ট্রাম্প। আর এরপরে উঠতেন ব্যাটারি রিকশায়। প্রত্যেকবার ব্যাটারি রিকশায় উঠেই নাকি ইলন নামের এক ব্যক্তিকে ফোন দিয়ে ব্যাটারির মাপ জানাতেন তিনি!
যেহেতু ট্রাম্পের মুখ থেকে সরাসরি এসব বিষয়ে জানা যায়নি, তাই ওপরের তথ্যগুলো যে কেউ বানোয়াট ভাবতেই পারেন। মনেই করতে পারেন যে, আজাইরা আলাপ সব। তাতে অবশ্য দোষের কিছু নেই। বরং ওতেই মঙ্গল!