বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার রাস্তায় দেখা গেছে ‘নতুন’ টেসলা! এই টেসলার গায়ে আবার লেখা আছে সাবধানবাণী। টেসলার লোগোর পাশের লেখাটি হচ্ছে—‘ সাবধান! আমি টেসলা’। এর পরেই আছে একটি অট্টহাসির ইমোজি। আর এমন ছবি হাতে পেয়ে আবেগে নাকি কেঁদেই ফেলেছেন টেসলা কোম্পানির অরিজিনাল মালিক ইলন মাস্ক!
সরস টিমের সচিত্র অনুসন্ধানে সম্প্রতি ঢাকার রাস্তায় এমন নতুন ধরনের টেসলার দেখা মিলেছে। রাজধানীর একটি ব্যস্ত রাস্তায় এর দেখা পাওয়া যায়। এক সারিতে এমন ধরনের অনেকগুলো টেসলা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। সাধারণত এগুলোর পেছনে ব্যাটারির অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে। এদের রঙও নানা ধরনের। কেউ সবুজ, কেউ লাল, কেউ আবার নীল।
সরস টিমের সচিত্র অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, এসব নতুন টেসলা দেখতেও হরেক রকমের। কোনোটার সামনে বাঁকানো কাঁচ আছে। কোনোটার আবার সেই কাঁচের জায়গায় পলিথিন আছে। কোনোটা উঁচু, কোনোটা একটু নিচু। মানে, এত এত মডেল! অবাক হয়ে যাওয়ার মতো বিষয়।
আর এই অবাক হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনার বর্ণনা, নতুন টেসলার কিছু ছবি ও সাথে লেখা সাবধানবাণী দেখে নাকি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন বিশ্বের শীর্ষ ধনী ও টেসলা কোম্পানির সত্যিকারের মালিক ইলন মাস্ক। এ বিষয়ে মাস্কের ঘনিষ্ঠ এক সূত্রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে জানা যায় যে, ইলন এখন ট্রাম্পের প্রশাসনে কিছুটা চাপে আছেন। এই চাপ শারীরিক ও মানসিক। এমন এক অবস্থায় ঢাকার রাস্তায় নতুন টেসলার গর্জন করে বেড়ানোর ছবি দেখে আর নিজেকে সামলে রাখতে পারেননি ইলন মাস্ক। ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কেঁদে ফেলেন তিনি!
এখানে উল্লেখ্য যে, ইলন মাস্কের টেসলা বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করে থাকে। এই কোম্পানির তৈরি যানবাহন নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা ও সমালোচনা আছে। আছে নানা অভিযোগও। গত মার্চ মাসের শেষের দিকে আমেরিকার বিভিন্ন জায়গায় ইলন মাস্কের সংস্থা টেসলার ইলেকট্রিক ভেহিক্যালের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। টেসলার গাড়িতে ভাঙচুরের পাশাপাশি টেসলার শো-রুমেও হামলার ঘটনা ঘটেছে। আবার চলতি বছরের প্রথম কোয়ার্টারে (প্রান্তিকে) এসে ছন্দপতন হয়েছে বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার ব্যবসায়। চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ সময়ে টেসলার বিক্রি হ্রাস পেয়েছে ১৩ শতাংশ। গত তিন বছরের মধ্যে নির্দিষ্ট কোনো কোয়ার্টারে এটাই টেসলার সবচেয়ে খারাপ পারফরম্যান্স। টেসলা অবশ্য বলছে, তাদের সবচেয়ে জনপ্রিয় মডেলটির নতুন ভার্সন বাজারে আসতে চলেছে। তাই গ্রাহকদের অনেকেই আসন্ন নতুন ভার্সনটি বাজারে আসার অপেক্ষায় আছে। ফলে সার্বিকভাবে বিক্রি পড়ে গেছে।
এখন সংশয় জাগানিয়া প্রশ্ন উঠছে যে, তবে কি ঢাকার রাস্তায় সেই নতুন ভার্সনেরই দেখা মিলল?
এ প্রশ্নের সঠিক কোনো উত্তর এখনও পাওয়া যায়নি। খোঁজার চেষ্টাও হয়নি। তবে একটি বিষয় মোটামুটি নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, টেসলা নিয়ে নানামাত্রিক ঝামেলার মধ্যে থাকা ইলন মাস্ক কিছুটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে নাকি পেরেছেন! ইলন নিজে অবশ্য এটি স্বীকার করে কোনো বক্তব্য দেননি, এক্স–এ কোনো পোস্টও দেননি। তবে ইলনের ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করা একটি সূত্র জানিয়েছে, এরই মধ্যে ঢাকার রাস্তায় রাজত্ব করে বেড়ানো নতুন টেসলার পেছনটা দেখে আবেগে কেঁদে ফেলা ইলনের ওই অশ্রু সংরক্ষণ করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, টেসলা বিষয়ক কোনো মিউজিয়াম তৈরি করা হলে সেখানে এই আবেগে টইটম্বুর ‘ইলনাশ্রু’ সঠিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা হবে।
অবশ্য বাংলাদেশে টেসলা পুরোপুরি নতুন কিছু নয়। এর আগে এক সরকারের মন্ত্রী পর্যায় থেকেও ‘বাংলার টেসলা’ নামক উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, সেই ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতেই ঢাকার রাস্তায় নতুন টেসলার অধিষ্ঠান। সেদিন হয়তো বেশি দূরে নয়, যেদিন ইলন মাস্ককেই আসল কোম্পানির সবাইকে নিয়ে ঢাকায় আসতে হবে নতুন প্রযুক্তি ও নকশা সম্পর্কে জানতে!
তাহলে পাঠক, আপনারাও তবে ঢাকার নতুন টেসলা নিয়ে আদিখ্যেতা শুরু করে দিন। ওই আমরা ফেসবুক, টিকটকে যা করি আর কি! কিন্তু সত্যি সত্যি ঢাকার টেসলায় ওঠার ক্ষেত্রে পেছনে থাকা সাবধানবাণীটা আগে পড়ে নেবেন দয়া করে। ওটাই তো সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ। মনে রাখবেন, ঢাকার টেসলা ‘টান’ দেওয়ার পরে জান হাতে রাখবেন, নাকি পকেটে—সেই বিবেচনা কিন্তু একান্তই আপনাদের!