ইলন মাস্ক ও মার্ক জাকারবার্গ। একজন চালান টেসলা, স্টারলিংক, মাঝে মাঝে আবার আকাশে রকেটও পাঠান। অন্যদিকে আরেকজন ফেসবুক খুলে দুনিয়ার মানুষকে আক্ষরিক অর্থেই পাগল বানিয়ে ফেলেছেন। প্রতিনিয়ত তাঁরা ব্যবসা–বাণিজ্যের পরিধি বাড়াতে সচেষ্ট থাকেন বলে শোনা যায়। এবার নাকি ঢাকার ব্যবসা নিয়ে মাস্ক–জাকারবার্গের ঝগড়া চরমে! সেটা এতটাই যে এরই মধ্যে ঢাকার ভাটারায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এই দুজনের মধ্যে নাকি ব্যাপক দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে!
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, ইলন মাস্ক ও মার্ক জাকারবার্গকে রেস্তোরাঁ ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের জন্য ট্রেড লাইসেন্স দিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। আর বাংলাদেশে কাঁকড়া ব্যবসার জন্য ডিএনসিসি থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
আরও জানা গেছে, ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ ও স্টারলিংকের মালিক ইলন মাস্কের নামে রেস্টুরেন্ট ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ট্রেড লাইসেন্সের আবেদন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা একজন দিয়েছেন ক্যালিফোর্নিয়ায়, আরেকজন দিয়েছেন সানফ্রান্সিসকো।
সংবাদমাধ্যমের দেওয়া খবর অনুযায়ী, সম্প্রতি ট্রেড লাইসেন্স প্রাপ্তি সহজ করেছে ডিএনসিসি। আর এ সুযোগে ভুয়া তথ্য দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স নেওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়েছে। এমন কিছু ট্রেড লাইসেন্স পাওয়া গেছে।
তবে যে যাই বলুক না কেন, আসল কথা হলো—ইলন মাস্ক ও মার্ক জাকারবার্গ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছেন! লাইসেন্সে তাঁদের সুন্দর সুন্দর ছবিও আছে। সরস টিমের কাজ হলো বিষয়টি নিয়ে একেবারেই অগভীর ও ফালতু একটা অনুসন্ধান করা। আর এই লেখায় সেটিই করার চেষ্টা করা হয়েছে।
অনুসন্ধানের শুরুতেই জানা যায় যে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা ক্যালিফোর্নিয়া, সানফ্রান্সিসকো দিলেও, মাস্ক ও জাকারবার্গ—এই দুজনেই কিন্তু ঢাকার ভাটারা অঞ্চলের হিসাব করেই ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছেন। অর্থাৎ, ব্যবসার ধান্দা তাঁদের ভাটারাতে করারই চিন্তা। আর এই বিষয়টি নিয়েই আদা–জল খেয়ে লেগে পড়ে সরস–এর অনুসন্ধানী টিম। জানার চেষ্টা ছিল, কেন বিশ্বের এই দুই ধনী ব্যক্তিই ঢাকার ভাটারা এলাকাকে বেছে নিলেন?
পেঁয়াজ দিয়ে এক গামলা পান্তা খেয়ে লম্বা একটা ঘুম দিতেই জানা গেল যে, ভাটারাতে ভাতের হোটেল খুলতে চান ইলন মাস্ক ও মার্ক জাকারবার্গ! দুজনেই এজন্য রেস্তোরাঁ ব্যবসার জন্য ই–ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছেন।
সমস্যা হলো, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব। একটি বায়বীয় সূত্র জানিয়েছে যে, মাস্ক ও জাকারবার্গ—দুজনেই ভাটারাতে ভাতের হোটেলই খুলতে চান। মাস্ক দীর্ঘদিন গাড়ি–রকেট নিয়ে ব্যবসা করেছেন। এক্স কিনে টুইটারের বারোটাও বাজিয়েছেন। এবার তিনি ভাটারায় ভাতের হোটেল খুলে নিজের ব্যবসায়ী পরিচয়কে অন্য মাত্রায় নিয়ে যেতে চান। কিন্তু তাতে বাগড়া দিচ্ছেন জাকারবার্গ। এক্স দিয়ে ফেসবুকের সঙ্গে মাস্কের টক্কর দেওয়ার চেষ্টাটা তাঁর ভালো লাগেনি। তাই এবার ভাতের হোটেল খুলে তিনিও মাস্ককে একটা ধাক্কা দিতে চান।
অবিশ্বস্ত একটি সূত্র জানিয়েছে, জাকারবার্গ এরই মধ্যে নাকি ভাটারায় হোটেল খোলার উপযোগী জায়গাও দেখতে শুরু করে দিয়েছেন। কেনা হয়ে গেছে ডেকচি, গামলাও। ওদিকে ভাতের হোটেলের ডেকচি, গামলার জন্য টেসলার তৈরি গাড়ি ভেঙে অ্যালুমিনিয়াম, লোহা ইত্যাদি সংগ্রহ করার নির্দেশ নাকি দিয়েছেন ইলন মাস্ক। সেই সঙ্গে ভাত খাওয়ার আগে ও পরে হাত–মুখ ধোওয়ার জন্য সাবেক টুইটার হেডকোয়ার্টারে নিয়ে যাওয়া বাথরুম সিংকটি বাংলাদেশে পাঠানোরও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি!
সুতরাং, বোঝাই যাচ্ছে যে, ভাটারার ভাতের হোটেল নিয়ে খুবই সিরিয়াস মার্ক জাকারবার্গ ও ইলন মাস্ক। এ নিয়ে নাকি ভাটারাতেও বেশ উত্তেজনা বিরাজ করছে। ভাটারার স্থানীয় এক ভবঘুরে ব্যক্তিকে এ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, দুই পক্ষের মধ্যেই আছে আলাদা জোশ। কেউ কাউকে ছাড় দিতে চাইছে না। তুলতে চাইছে না সাদা পতাকাও। অন্যদিকে শান্তির বাণী নিয়ে দু–একজন এগিয়ে আসার চেষ্টা করলেও, সুবিধা করতে পারছে না আদতে। কারণ মাস্ক ও জাকারবার্গের লোকজন কাউকেই নাকি গুণতে চাইছে না!
ভিডিও দেখুন:
সে যাক গে। আসল কথা হলো, ঢাকার ভাটারায় খুলছে নতুন দুটি ভাতের হোটেল। স্থানীয় ভাত–ভর্তাপ্রেমীদের জন্য এ এক নিদারুণ সুখবর বলেই মনে করছেন স্থানীয় আদার ব্যাপারিরা। তবে মাস্ক ও জাকারবার্গের দ্বন্দ্ব নিয়েও আছে আশঙ্কার কালো ছায়া। শেষ পর্যন্ত কার ব্যবসা এগিয়ে যায়, সেটিই এখন দেখার। যদিও এই নাটকের শেষ পর্যন্ত দেখার জন্য গভীর ঘুম ও আওলাঝাওলা স্বপ্নের দুনিয়ায় বিচরণ করা সব দর্শকের জন্যই অত্যাবশ্যক!