বন্যায় সব হারিয়ে নিঃস্ব কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বুড়বুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দারা। ১৫ দিনে আগেও যারা ছিলেন সচ্ছল, ঘরবাড়ি-খেতের ফসল, পুকুরের মাছ হারিয়ে এখন তাঁরা সহায়-সম্বলহীন। বাঁচার জন্য হাত পাততে হচ্ছে অন্যের কাছে।
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বুড়বুড়িয়া গ্রামের মুদি দোকানের কর্মচারী আব্দুস সালাম। গত ২৩ আগস্ট নিজের জমির ধান কাটার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তার একদিন আগে গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে তলিয়ে যায় ঘরবাড়ি। ভেসে যায় পুকুরের মাছ, খেতের ফসল।
আশ্রয়কেন্দ্রে ১২ দিন কাটিয়ে বাড়ি ফিরে দেখেন দুই ভাইয়ের মাথা গোজার আশ্রয়টুকু ধ্বংস করে দিয়ে গেছে বন্যার পানি। এখন অন্যের সহযোগিতা পাওয়ার আশায় কাটছে তাঁদের দিন।
আবদুস সালাম বলেন, ‘যেদিন পানি ঢুকছে তার পরের দিন ধান কাটার কথা ছিল। এখন সব শেষ ভাই। এখন আকাশের নিচে আছি, এছাড়া থাকার মতো আর কোনো জায়গা নাই।’
ওই বাড়ির আরেক গৃহবধূ বলেন, ‘সবকিছু নিয়ে গেছে বন্যায়, থাকার জায়গাটুকুও নাই।’ আরেক নারী বলেন, ‘কষ্টেমষ্টে সংসার চলছে, অহন তো একবারেই শ্যাষ।’
এমন বন্যা গত ৫০ বছরেও দেখেনি গোমতী পাড়ের বাসিন্দারা। বানের পানি যেদিক দিয়ে গেছে, সেখানেই ভাসিয়ে নিয়েছে সবকিছু।
ওই এলাকার এক বৃদ্ধা বলেন, ‘এরকম বন্যা কোনোদিন দেখি নাই। সবাই বলতেছিল ৩৫-৩০ ফুট উপরে পানি আসতেছে। এই গুঞ্জনে কোথায় যাব কি করব কিছু বুঝতেছিলাম না, বড়ই ভয় পাইছি আমরা।’
উপজেলা প্রশাসনের হিসাবে, বন্যায় শুধু বুড়িচং উপজেলাতেই ২০ হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে প্রায় ২ হাজার বাড়িঘর নষ্ট হয়েছে পুরোপুরি।