বিশ্বের সবচেয়ে বড় ‘ফ্যান্সি ভিভিড ব্লু’ হীরাটি আগামী ১৪ মে নিলামে উঠতে যাচ্ছে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায়। খ্যাতনামা নিলাম প্রতিষ্ঠান ক্রিস্টিস এই আয়োজন করছে। ২৩.২৪ ক্যারেট ওজনের হীরাটির দাম উঠতে পারে ৫০ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা।
‘গোলকোণ্ডা ব্লু’ নামে পরিচিত হীরাটি শুধু তার উজ্জ্বল নীল রঙের জন্যই বিখ্যাত নয়। হীরাটির রয়েছে শত বছরের পুরোনো এক রাজকীয় ইতিহাস। একসময় এটি ছিল ভারতের ইন্দোরের মহারাজা ইয়েশবন্ত রাও হোলকারের গহনার সংগ্রহে।
জানা যায়, ১৯২৩ সালে প্যারিসের নামকরা গহনার ব্র্যান্ড চৌমের মাধ্যমে হীরাটি প্রথম বসানো হয় একটি ব্রেসলেটে। দশক ঘুরতেই এটি নতুন রূপ পায়। বসানো হয় একটি নেকলেসে, যা মহারাজার রানি’র জন্য তৈরি করেছিল মাবুসাঁ। সেই সময় ভারতীয় রাজপরিবারের বিলাসবহুল জীবনযাপন ও গহনার প্রতি ভালোবাসার এক উদাহরণ ছিল এই হীরা।
ভারতের স্বাধীনতার সময়, ১৯৪৭ সালে হীরাটি পৌঁছায় মার্কিন কিংবদন্তি জুয়েলার হ্যারি উইনস্টনের হাতে। পরে তিনি এটিকে একটি ব্রোচ হিসেবে বিক্রি করেন বরোদার মহারাজার কাছে। দীর্ঘদিন বিভিন্ন ব্যক্তিগত সংগ্রহে থাকার পর এখন আবার এটি জনসম্মুখে আসছে। এবার হীরাটি বসানো হয়েছে বিশ্ববিখ্যাত গহনাশিল্পী জেএআর এর তৈরি একটি রিংয়ে। নিলামে এটি ‘বিলাসবহুল রত্ন’ বিভাগের প্রধান আকর্ষণ হিসেবে রাখা হবে।
ক্রিস্টিসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘হীরাটির রঙ, কাটা ও গঠন একেবারে নিখুঁত। রাজকীয় ঐতিহ্যের অংশ হওয়ায় এর মূল্য শুধু অর্থমূল্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক ঐশ্বর্যেরও প্রতীক।’
বিশেষজ্ঞদের মতে, এত বড় ও উজ্জ্বল ‘নীল হীরা’ বাজারে আসা বিরল ঘটনা। নিলামে এর দাম উঠতে পারে ২০ থেকে ৫০ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত।
সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী প্রাচীন ও রাজকীয় গহনার প্রতি সংগ্রাহকদের আগ্রহ বেড়েছে। বিশেষ করে ভারতীয় উপমহাদেশের রাজপরিবারের ঐতিহ্যবাহী গহনাগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যাপক মূল্য পাচ্ছে। ইতিহাস ও রাজকীয়তার ছোঁয়া যুক্ত হওয়ায় এসব রত্নের প্রতি ক্রেতাদের আকর্ষণ অন্য রকম।
১৪ মে নিলামে উঠবে এই গোলকোণ্ডা ব্লু হীরা। তাই তো ইতিহাসপ্রেমী ও সংগ্রাহকদের নজর এখন জেনেভার দিকে।
তথ্যসূত্র: ক্রিস্টিস, সিএনএস, ইন্ডিয়া টুডে, দ্য ন্যাশনাল নিউজ