বিমান নামার সঙ্গে সঙ্গেই উঠে দাঁড়ান কিংবা ব্যাগ টানাটানি শুরু করেন? তাহলে আপনার অভ্যাসের এবার পরিবর্তন আনতে হবে। কারণ তুরস্কে চালু হচ্ছে নতুন একটি নিয়ম। যেখানে বিমান থামার আগেই যদি কোনো যাত্রী উঠে দাঁড়ান, তাহলে তাকে গুনতে হতে পারে মোটা অঙ্কের জরিমানা।
তুরস্কের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি একটি নির্দেশনায় জানিয়েছে, যাত্রীরা যদি বিমান সম্পূর্ণভাবে পার্কিং না হওয়া পর্যন্ত সিটে বসে না থাকেন বা সিট বেল্ট না খোলেন, তাহলে তা নিয়মভঙ্গ হিসেবে গণ্য হবে। বিশেষ করে যারা বিমান থামার আগেই উঠে দাঁড়ান, ব্যাগ নামাতে যান কিংবা করিডোরে ভিড় করেন। তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা। তুরস্কের জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেল হাল্ক টিভি জানিয়েছে, এমন আচরণ করলে যাত্রীদের গুনতে হতে পারে প্রায় ২ হাজার ৬০০ তুর্কি লিরা জরিমানা। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮ হাজার ১৫০ টাকা।
বেসামরিক বিমান চলাচল বিভাগের মহাপরিচালক কেমাল ইউকসেক জানান, সাম্প্রতিক সময়ে যাত্রীদের মধ্যে নিরাপত্তাবিধি না মানার প্রবণতা অনেক বেড়ে গেছে। বিমান থামার আগেই উঠে দাঁড়ানো, সিট বেল্ট খুলে ফেলা, ওভারহেড লাগেজ বের করা কিংবা করিডোরে দাঁড়িয়ে যাওয়া। এসব আচরণে বিমানের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে। একই সঙ্গে এতে যাত্রী ও লাগেজ নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে, বাড়ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিমানের অবতরণের সময় সিট সোজা ও সিট বেল্ট বাঁধা থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই সময় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে। সিট পেছনে হেলে থাকলে তা ধাক্কা খেয়ে সামনের যাত্রীকে আঘাত করতে পারে। সে কারণেই বিশ্বব্যাপী এভিয়েশন কর্তৃপক্ষগুলো টেকঅফ ও ল্যান্ডিংয়ের সময় সিট সোজা ও বেল্ট বাধা রাখার নিয়ম চালু রেখেছে।
এই নতুন নিয়মের লক্ষ্য হলো, যারা অহেতুক তাড়াহুড়ো করে আগে বের হতে চান, তাদেরকে নিরুৎসাহিত করা। কারণ এমন তাড়াহুড়ো কেবল যে ঝুঁকিপূর্ণ। তা-ই নয়, বিমানের ভেতর নামার প্রক্রিয়াকেও দেরি করিয়ে দেয়। ফলে অন্য যাত্রীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হন।
তুরস্কের এই সিদ্ধান্ত বিশ্বব্যাপী আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কারণ বহু দেশে যাত্রীরা বিমানের চাকা মাটিতে লাগার সঙ্গে সঙ্গেই উঠে দাঁড়িয়ে যান। এবার হয়তো সময় এসেছে, এই অভ্যাস বদলানোর। কারণ কিছুটা ধৈর্য না দেখালে জরিমানা গুনে বিদেশ ভ্রমণ শুরু করার অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই কেউই চান না।