ভারতের গুজরাটের আহমেদাবাদে দুই শতাধিক যাত্রী নিয়ে একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ঘটনার পর বিমানে ভ্রমণের সময় কীভাবে নিরাপদ থাকা যায়, সেই প্রশ্নটি আবারও সামনে এসেছে। বিমানের সুরক্ষা ব্যবস্থা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি যাত্রীর নিজের সচেতনতাও। তাই বিমানে ওঠার আগে জেনে নিন কিছু প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিয়ম। যা ঝুঁকির মুখে আপনাকে রক্ষা করতে পারে।
বিমানের ভেতরে যেভাবে নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন
সিটবেল্ট বেঁধে রাখুন: টার্বুলেন্স বা ঝাঁকুনির সময় অধিকাংশ আঘাত হয় সিটবেল্ট না বাঁধার কারণে। তাই সিটবেল্টের আলো নিভে গেলেও বেল্ট বাঁধা রাখাই ভালো। অপ্রত্যাশিত ঝাঁকুনিতে এটাই আপনাকে নিরাপদ রাখবে।
ক্রুদের নির্দেশ মানুন: ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টরা শুধু খাবার পরিবেশন করেন না, তারা প্রশিক্ষিত জরুরি পরিস্থিতি সামলাতে। সিটবেল্টের নির্দেশ, নিরাপত্তাবিষয়ক ঘোষণা, কিংবা যেকোনো নির্দেশ দ্রুত মানা উচিত।
হেঁটে বেড়ানো এড়িয়ে চলুন: যাত্রাপথে বাথরুমে থাকাকালীন যদি ঝাঁকুনি শুরু হয়। তাহলে সুযোগ পেলে দ্রুত নিজের সিটে ফিরে আসুন। সম্ভব না হলে, সিট বা দেয়াল ধরে নিজেকে স্থির রাখুন।
জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখুন: হাতব্যাগ, ল্যাপটপ বা বোতলের মতো জিনিসগুলো ঝাঁকুনির সময় উড়তে পারে। যা যে কাউকে আহত করতে পারে। তাই এসব জিনিস সিটের নিচে বা ওভারহেড বিনে রাখুন।
ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ‘ব্রেস পজিশন’ নিন: যদি কেবিন ক্রু বলেন, তাহলে সেই মতো করে ব্রেস পজিশনে যান-
- মাথা নিচু করে সামনে ঝুঁকে যান।
- দুই হাত দিয়ে মাথা ঢেকে ঘাড়ের পেছনে রাখুন।
- পা একসঙ্গে ফ্ল্যাট করে মাটিতে রাখুন।
জরুরি অবতরণের সময় কী করবেন
ক্যাপ্টেন বা ক্রু যদি জরুরি ল্যান্ডিংয়ের ঘোষণা দেন। তখন তাদের প্রতিটি কথা গুরুত্ব দিয়ে শুনুন। আর সেই অনুযায়ী কাজ করুন।
ব্রেস পজিশন নিন: সামনের সিটে মাথা ঠেকিয়ে রাখুন। সামনের সিট না থাকলে হাঁটুতে মাথা রেখে ঝুঁকে থাকুন। ঘাড় ঢেকে রাখতে পারেন হাতে বা ধরে রাখতে পারেন পায়ের গোড়ালি।
অক্সিজেন মাস্ক ব্যবহারে সচেতন থাকুন: চাপ কমে গেলে মাস্ক ঝুলে পড়বে। প্রথমে নিজে মাস্ক পরুন, তারপর অন্যকে সহায়তা করুন। স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিন, নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত মাস্ক খুলবেন না।
জরুরি দরজার অবস্থান জেনে রাখুন: ফ্লাইট শুরুর আগে লক্ষ্য করুন আপনার কাছাকাছি কোন এক্সিট দরজাগুলো রয়েছে। পরিস্থিতি খারাপ হলে এগুলো ব্যবহার করতে হবে ক্রুর নির্দেশ অনুযায়ী।
জরুরি বের হওয়া সময় যা করবেন
- নিজের ব্যাগ বা মালপত্র ফেলে দিন। বাঁচা আগে, মালপত্র পরে।
- ঠান্ডা মাথায় দ্রুত বেরিয়ে যান।
- পানিতে নামার আগে বিমানের ভেতরেই লাইফ জ্যাকেট পরুন এবং বাইরে বেরিয়ে ফোলান।
- ধোঁয়ার মধ্যে থাকলে নিচু হয়ে হাঁটুন, মুখ ঢেকে রাখুন।
- এয়ারক্রাফট ফ্লোরে থাকা আলো অনুসরণ করে এক্সিটের দিকে এগিয়ে যান।
একটু সচেতনতাই পারে বড় বিপদে জীবন বাঁচাতে। বিমানে ওঠার আগে এই জরুরি নিরাপত্তা বিষয়গুলো জেনে রাখুন। যাতে বিপদের সময়ও আপনি এবং আপনার আশেপাশের মানুষ নিরাপদে থাকেন।