নোয়াখালীর সদর উপজেলার অশ্বদিয়া ইউনিয়নে এক পল্লী চিকিৎসকের ছুরিকাঘাতে ছাত্রদলকর্মী আবুল হোসেন রাফির (১৯) মৃত্যুর ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে রাফির বাবা আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে পল্লি চিকিৎসক গিয়াস উদ্দিন শাহীনকে (৬০) আসামি করে সুধারাম মডেল থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
এদিকে ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত গিয়াস উদ্দিন শাহীন ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে। তাঁকে ধরতে অভিযানে নেমেছে পুলিশ।
নিহত ছাত্রদলকর্মী আবুল হোসেন রাফির বাড়ি অশ্বদিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের অলিপুর গ্রামের বাসিন্দা। রাফি ছাত্রদলের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন বলে জানিয়েছেন অশ্বদিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি ফখরুল ইসলাম। তাঁর মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে অশ্বদিয়া অলিপুর গ্রামের সুলতানা সোলাইমান উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বন্ধুদের সাথে ফুটবল খেলছিলেন রাফি। খেলার একপর্যায়ে রুমন নামে এক বন্ধুর ঠোঁট কেটে গেলে, তাঁকে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক গিয়াস উদ্দিন শাহীনের কাছে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। ওই সময় শাহীন চা দোকানে বসে ছিলেন। তিনি চিকিৎসা দিতে অস্বীকৃতি জানালে রাফির সঙ্গে বাকবিতণ্ডা ও পরে হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে শাহীন দোকানে থাকা ছুরি দিয়ে রাফির গলার নীচে আঘাত করেন। পরে স্থানীয়রা রাফিকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে রাত ১২টার দিকে কুমিল্লায় মারা যান রাফি।
অভিযুক্ত মো. শহীন অশ্বদিয়া ইউনিয়নের আনিছপুর গ্রামের সুজাত উল্যার ছেলে। এক সময় নৌবাহিনীতে চাকরি করতেন তিনি। চাকরি থেকে অবসরে আসার পর তিনি থেকে বাড়িতে লোকজনকে চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। এ জন্য এলাকার তিনি শাহীন ডাক্তার নামে পরিচিত।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মো. শাহরিয়ার বলেন, রাফির গলায় তিন ইঞ্চি গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়ে ধমনি কেটে গেছে। যার কারণে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।
স্বজনেরা জানিয়েছেন, নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে রাফিকে ঢাকায় নেওয়ার পথে কুমিল্লায় দুই ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়। এরপরও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। নিহতের স্বজন, সহপাঠী, এলাকাবাসী এবং বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা এ ঘটনায় অভিযুক্ত পল্লি চিকিৎসক গিয়াস উদ্দিন শাহীন খুঁজে বের করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। অভিযুক্ত পল্লি চিকিৎসক গিয়াস উদ্দিন শাহীনকে ধরতে রাতেই অভিযানে নামে পুলিশ। তবে, ঘটনার পর এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। তাকে ধরার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।