ভারতের আহমেদাবাদ বিমানবন্দরের কাছে এয়ার ইন্ডিয়ার উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের পর মার্কিন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের শেয়ারদর উল্লেখযোগ্যহারে কমে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদর ৭ শতাংশ কমেছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট এআই–১৭১ ভারত থেকে লন্ডনের পথে ছিল। মাত্র ৬৭২ ফুট উচ্চতায় পৌঁছানোর পরই এটি দুর্ঘটনায় পড়ে। বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার মডেলের উড়োজাহাজটিতে মোট ২৪২ জন আরোহী ছিলেন। এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, এদের মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, সাতজন পর্তুগিজ ও একজন কানাডিয়ান ছিলেন।
বৈশ্বিক উড়োজাহাজ চলাচল পর্যবেক্ষণ করা প্রতিষ্ঠান ফ্লাইটর্যাডার টোয়েন্টিফোর বলছে, ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে ড্রিমলাইনার মডেলের এই উড়োজাহাজটি এয়ার ইন্ডিয়াকে সরবরাহ করে বোয়িং।
৭৮৭ ড্রিমলাইনার দুই ইঞ্জিন বিশিষ্ট একটি সুপরিসর উড়োজাহাজ। এভিয়েশন সেফটি নেটওয়ার্কের তথ্য বলছে, এটিই এই মডেলের উড়োজাহাজের প্রথম দুর্ঘটনা।
দুর্ঘটনার পর বোয়িং এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা দুর্ঘটনার প্রাথমিক রিপোর্ট সম্বন্ধে অবগত এবং এ সংক্রান্ত আরও তথ্য সংগ্রহে কাজ করছে।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমন এক সময় এই দুর্ঘটনাটি হলো যখন বোয়িং তার নির্মিত উড়োজাহাজগুলো নিয়ে ওঠা আস্থাহীনতা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। বিশেষ করে ৭৩৭ ম্যাক্স মডেলের উড়োজাহাজ নিয়ে বেশ বিতর্কের মধ্যে রয়েছে বোয়িং।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনার পর প্রি-মার্কেট ট্রেডিংয়ে বোয়িং ৮ শতাংশ দর হারিয়েছে।
ফ্লাইটর্যাডার বলছে, ২০০৯ সালে আত্মপ্রকাশের পর এই মডেলের হাজারেরও বেশি উড়োজাহাজ ডজন খানেক এয়ারলাইনসের কাছে সরবরাহ করেছে বোয়িং।
২০২৪ সালের মার্চে, আমেরিকার ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) এই মডেলটিকে বাড়তি পর্যবেক্ষণে রাখার নির্দেশ দেয়। একই সঙ্গে ড্রিমলাইনারের তিনটি মডেল ৭৮৭–৮, ৭৮৭–৯, ৭৮৭–১০ এর জন্য নতুন এয়ারওর্দিনেস নির্দেশিকা (এডি) বাধ্যতামূলক করা হয়।
গত মে মাসে বোয়িংয়ের উৎপাদনের সংখ্যাকে ইতিবাচক হিসেবেই বিবেচনা করছিলেন ওয়াল স্ট্রিটের বিশ্লেষকেরা। ফলে তাদের শেয়ারের দর প্রায় ২০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। কিন্তু এয়ার ইন্ডিয়ার উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় এই উত্থান হোঁচট খাবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।