পরবর্তী পাঁচ বছর ফ্যাশন দুনিয়ার জন্য হতে চলেছে এক দারুণ সময়। বদলে যেতে পারে রুচি, চাহিদা, এমনকি পোশাক তৈরির পদ্ধতিও। প্রযুক্তি, পরিবেশ ও সংস্কৃতির প্রভাবে তৈরি হতে চলেছে ফ্যাশনের এক নতুন চেহারা।
ফ্যাশন বিশ্লেষকদের মতে, ২০৩০ সালের মধ্যেই দেখা যাবে এই পরিবর্তনের ছাপ। কীভাবে বদলাবে ফ্যাশনের জগৎ? দেখে নেওয়া যাক এক ঝলকে।
পরিবেশের কথা মাথায় রেখে
জীবনযাত্রায় পরিবেশবান্ধব চিন্তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বদলাবে ফ্যাশনের ধারাও। টেকসই ফ্যাশনের দিকে ঝুঁকছেন অনেকেই।
অর্গানিক কটন, বাঁশ কিংবা জৈব তন্তু দিয়ে তৈরি পোশাকের চাহিদা বাড়ছে। পুরোনো পোশাক দিয়ে নতুন কিছু বানানো—যাকে বলা হয় ‘সার্কুলার ফ্যাশন’। এখন এটি তরুণদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। মায়ের পুরোনো বেনারসি বা দাদির গরদ, সবই নতুন রূপে পরা হচ্ছে।
প্রযুক্তির ছোঁয়া ফ্যাশনে
ফ্যাশনের সঙ্গে জোরালোভাবে যুক্ত হচ্ছে প্রযুক্তি। শরীরের তাপমাত্রা বুঝে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এমন স্মার্ট পোশাক। ভার্চুয়াল ফ্যাশন, যা শুধু অনলাইন বা গেমিং প্ল্যাটফর্মে পরার উপযোগী। কম খরচে টেকসইভাবে পোশাক তৈরি—সবই সম্ভব হচ্ছে প্রযুক্তির জোরে। ফ্যাশন শুধু শরীরে নয়, এবার ঢুকে পড়বে ভার্চুয়াল জগতে। এই তো কিছুদিন আগে দেশীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড লা রিভ চালু করল ভার্চুয়াল ট্রায়াল রুম। যেখানে পছন্দের পোশাকটি নিজেকে কেমন লাগে দেখা যাবে।
সমাজ ও সংস্কৃতির প্রভাব
বিশ্বায়নের প্রভাবে ফ্যাশনেও আসছে মিশ্রতা। বিভিন্ন সংস্কৃতির পোশাকের ডিজাইন ও কারিগরির সংমিশ্রণে তৈরি হবে নতুন ধারা। শারীরিক গড়ন বা লিঙ্গভেদ নয়, সব মানুষের জন্য সমানভাবে তৈরি হবে পোশাক। অন্তর্ভুক্তির বার্তা নিয়েই এগোবে নতুন ফ্যাশন।
রেট্রো ফিরছে, নতুন মোড়কে
পুরোনো ফ্যাশন ধারা ফিরে আসবে নতুন রূপে। ৭০-এর দশকের প্যাটার্ন, ৯০-এর ‘গ্রাঞ্জ’ লুক—সবই ফিরছে আধুনিক ছোঁয়ায়। বহু বলিউড তারকাকেও ইতিমধ্যে দেখা গেছে এই রেট্রো ফ্যাশনে। ট্রেন্ডটা শুধু শুরু, ভবিষ্যতে আরও ছড়াবে।
মিনিমাল ও ম্যাক্সিমাল, দুই ধারায় সমান চলন
একদিকে কম ও সহজ স্টাইলের ‘মিনিমালিজম’, অন্যদিকে রঙিন, জাঁকজমকপূর্ন ‘ম্যাক্সিমালিজম’। এই দুই বিপরীত ধারাই একসঙ্গে চলবে। যেমন হালকা রঙের পোশাকেও থাকবে চকমকে কাজ। নতুন ধারায় ফুটে উঠবে টেকসইতা আর স্টাইলের সংমিশ্রণ।
পছন্দ অনুযায়ী পোশাক বানানোর যুগ
ব্র্যান্ডগুলো আর শুধু নিজেদের মতো পোশাক বানিয়ে দেবে না। ক্রেতার রং, ডিজাইন, ফ্যাব্রিক পছন্দ অনুযায়ী তৈরি হবে পোশাক। এতে যেমন অপচয় কমবে, তেমনি বাড়বে মান। ব্যবসাও চলবে টিকিয়ে রেখে।
সোশ্যাল মিডিয়ার দাপট
ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুকের মতো প্ল্যাটফর্ম থেকেই তৈরি হবে ফ্যাশন ট্রেন্ড। ফ্যাশন ইনফ্লুয়েন্সারদের প্রভাব থাকবে বেশি। যে ফ্যাশন ছবিতে ভালো লাগে, সেটাই হয়ে উঠবে নতুন স্টাইল।
পরিবেশ, প্রযুক্তি, সংস্কৃতি আর ব্যক্তিগত পছন্দ। সব মিলিয়ে ফ্যাশন দুনিয়া পা রাখতে চলেছে এক নতুন যুগে। আপনি কি প্রস্তুত সেই নতুন ঢেউয়ের জন্য?
তথ্যসূত্র: ইনস্টাইল