ফুলের মধ্যে গোলাপের নাম একটু আলাদাভাবেই আসে। গোলাপ মূলত শীতকালীন ফুল। শীতে বাড়ির ছাদে বা ব্যালকনিতে রঙবেরঙের ফুটে থাকা গোলাপ দেখতে কে না ভালোবাসে!
তবে এমন গোলাপ পেতে যত্ন শুরু করতে হবে এখন থেকেই। রইল গোলাপের যত্ন নেওয়ার কিছু টিপস।
আবহাওয়া: বেশি উষ্ণ কিংবা আর্দ্র কোনো আবহাওয়াই গোলাপ গাছের জন্য উপযুক্ত নয়। আমাদের দেশীয় তাপমাত্রা অনুযায়ী ২০ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা গোলাপ চাষের জন্য উপযুক্ত।
সূর্যালোক: গোলাপ গাছ বেড়ে ওঠার জন্য অন্তত ৬ ঘণ্টা সূর্যালোক প্রয়োজন। টব কিংবা বাগান, গাছের অবস্থা যেখানেই হোক-সূর্যালোকের শর্তপূরণ আবশ্যক।
মাটি: অক্টোবর থেকে শুরু করে ফেব্রুয়ারি মাস গোলাপের চারা রোপণের জন্য উপযুক্ত সময়। অনেকেই এঁটেল মাটি নির্বাচিত করে থাকেন গোলাপ চাষের জন্য। দোআঁশ মাটি গোলাপ চাষের জন্য ভাল। মাটিতে পিএইচের মাত্রা থাকা প্রয়োজন ৬-৭।
তবে যারা টবে সীমিত পরিসরে গোলাপ গাছের চাষ করে থাকেন তারা দোআঁশ মাটি ব্যবহার করতে না পারলেও এঁটেল মাটি সারের সঙ্গে মিশিয়ে টবে লাগাতে পারেন।
পানি নিষ্কাশন: গোলাপ গাছের বৃদ্ধির জন্য পানি প্রয়োজন। তবে মাটিতে পানি জমে থাকলে শিকড় পচে যেতে পারে। তাই যে টবে গাছটি লাগানো হয়েছে, তার পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভাল হওয়া প্রয়োজন। গাছে পানি দিতে হবে মাপ বুঝে।
পোকা: আর্দ্র আবহাওয়ায় গোলাপ গাছে পোকা ধরে, ছত্রাকের আশঙ্কাও বেড়ে যায়। তাই নিয়ম করে ছত্রাকনাশক আর কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে। মাসে ১৫ দিন অন্তর ছত্রাকনাশক স্প্রে করা উচিত। স্প্রে করার সবচেয়ে ভালো সময় ভোরবেলা বা সূর্যাস্তের পরে। স্প্রে করার ৭ ঘণ্টার মধ্যে বৃষ্টি হলে পুনরায় স্প্রে করতে হবে।
পাতা কালো হয়ে যাওয়া: গোলাপ গাছের আরও একটি সমস্যা হচ্ছে গাছের নানা অংশ কালো হয়ে মরে যাওয়া। এ রোগটিকে ডাইব্যাক বলে। এর প্রতিকার পেতে গাছের রোগাক্রান্ত অংশটি কেটে ফেলতে হবে।
গোলাপ গাছের যত্নে আরও যা মনে রাখতে হবে তা হলো-
- গোলাপ গাছের ফুল শুকিয়ে গেলে তার বেশ কিছুটা নীচ থেকে ডালটি কেটে দিতে হবে। এতে নতুন শাখা গজাবে। ফুলের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।
- যে ডালপালায় ফুল ধরছে না, সেগুলোও নিয়ম মেনে ছেঁটে দিতে হবে।
- গাছে ভালো ফুল পেতে গেলে নির্দিষ্ট সময় অন্তর সার প্রয়োগ করতে হবে। পাতা পচা সার এবং ইউরিয়া, ডাই-অ্যামোনিয়াম সালফেট ফুলের আকার বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।