বর্তমানে ক্রিকেট বিশ্বে সবচেয়ে ভয়ংকর পেসার কে? উত্তর খোঁজার আগে কেউ কেউ হয়তো প্রশ্নেই ‘ভুল’ খুঁজতে বসবেন। তাদের যুক্তি হতে পারে, ক্রিকেটের ভিন্ন তিন সংস্করণে আলাদা আলাদা পেসার ভয়ংকর হতে পারেন। সব সংস্করণ চিন্তা করলে শুধু পেসারের নামই মাথায় আসে- যশপ্রীত বুমরা!
ভারতীয় পেসারকে নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। ব্যতিক্রমী বোলিং স্টাইল, দুর্দান্ত গতি, সুইংয়ের সঙ্গে ইয়র্কার দেওয়ার ক্ষমতা বুমরাকে অন্য সবার চেয়ে আলাদা করেছে। ক্রিকেটের যে সংস্করণ কিংবা ম্যাচের যেকোনো পরিস্থিতি হোক না কেন, বল পুরোনো নাকি নতুন- সেসবে কিচ্ছু যায় আসে না। বল হাতে বুমরা সবসময়ই সমান ভয়ংকর।
সদ্য সমাপ্ত চেন্নাই টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন ৩০ বছর বয়সী এ ডানহাতি পেসার। উইকেট সংখ্যা হয়তো আরও বাড়তে পারত। কিন্তু বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে রবীচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজা ৯টি উইকেট বাগিয়ে নিয়েছেন। সে যাই হোক, এটি ছিল লাল বলের ক্রিকেটে বুমরার ৩৭তম টেস্ট। ২০১৮ সালে টেস্টে অভিষেকের পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৬৪ উইকেট নিয়েছেন বুমরা।
সংখ্যাটা নজরকাড়া হলেও ক্যারিয়ারের ৩৭তম টেস্ট শেষে বুমরার চেয়েও উইকেট সংখ্যায় এগিয়ে ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান পেসার প্যাট কামিন্স ও দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার কাগিসো রাবাদা। শুধু সংখ্যার বিচারে কাউকে সেরা বললে হয়তো অনেক কিছুই বলা হয় না।
প্রথম ৩৭ টেস্ট শেষে বুমরা, কামিন্স ও রাবাদা-
এ তিন পেসারের মধ্যে লাল বলের ক্রিকেটে সবার আগে অভিষেক হয়েছে কামিন্সের। ২০১১ সালে অভিষেক হওয়া অস্ট্রেলিয়ান পেসার ৩৭ টেস্ট শেষে উইকেট সংখ্যা ছিল ১৭৮টি। মজার বিষয়, চার বছর পরে অভিষেক হওয়া রাবাদারও লাল বলে ৩৭ ম্যাচ শেষে উইকেট ছিল ১৭৮টি। ভারতীয় পেসার দুজনের চেয়ে ১৪ উইকেট কম পেয়েছেন।
গড় বিবেচনায় আবার সবার চেয়ে এগিয়ে বুমরা। মাত্র ২০.৫১ গড়ে উইকেট নিয়েছেন তিনি। এরপর কামিন্স (২৪.৩৩)। সবচেয়ে বেশি খরচে রাবাদা (২৮.৭৫)। ওভারপ্রতি রান খরচের ক্ষেত্রে কামিন্স ও বুমরা সমানে সমান। দুজনেও প্রতি ওভারে দিয়েছেন ২.৭৬ রান। এক্ষেত্রেও রাবাদা কিছুটা উদার (৩.২৯)।
বোলার | ম্যাচ | উইকেট | ইকোনমি | গড় |
প্যাট কামিন্স | ৩৭ | ১৭৮ | ২.৭৬ | ২৪.৩৩ |
কাগিসো রাবাদা | ৩৭ | ১৭৮ | ৩.২৯ | ২৮.৭৫ |
যশপ্রীত বুমরা | ৩৭ | ১৬৪ | ২.৭৬ | ২০.৫১ |
এ তো গেলো সরাসরি পরিসংখ্যান। অভিষেকের পর দীর্ঘ সময় চোটের কারণে দীর্ঘ সময় মাঠের বাইরে ছিলেন বুমরা, যা তাঁর লাল বলের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে প্রভাবিত করেছে।
এ যুক্তিতে কামিন্সকেও পিছিয়ে রাখার সুযোগ নেই। ২০১১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অভিষেক টেস্ট খেলার পর দ্বিতীয় টেস্টের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে দীর্ঘ ৬ বছর। ২০১৭ সালের মার্চে রাচিতে ভারতের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট খেলেন অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট অধিনায়ক। এরপর থেকে লাল বলের ক্রিকেটে নিয়মিত কামিন্স ক্যারিয়ারের ৩৭তম টেস্ট খেলেছেন ২০২২ সালের মার্চে।
রাবাদা অবশ্য বাকি দুজনের চেয়ে কিছুটা আলাদা। অভিষেকের পর থেকে নিয়মিত টেস্ট খেলা দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার ক্যারিয়ারের ৩৭তম টেস্ট খেলেছেন ২০১৯ সালে। এর মধ্যে ২৩টি টেস্ট ঘরের মাঠে খেলেছেন রাবাদা। কামিন্সও প্রথম ৩৭ টেস্টের ২৩টি খেলেছেন ঘরের মাঠে।
এ সুযোগটা কম পেয়েছেন বুমরা। অভিষেকের পর মাত্র ৮টি টেস্টে নিজেদের দর্শকের সামনে বোলিং করতে পেরেছেন ভারতীয় পেসার।