এমন উন্মাদনার জন্য কত বছর ধরেই না অপেক্ষায় ছিল বাংলাদেশের ফুটবল!
একাদশ কেমন হবে, কে খেলবেন, কাকে খেলানো উচিত বা উচিত নয়, কোন ফর্মেশনে খেলা উচিত বাংলাদেশের… কত প্রশ্ন ছিল ফুটবলপ্রেমীদের মনে! পরামর্শের আকারে হোক কিংবা বিশ্লেষণ বা নেহাতই সমালোচনা…যেকোনো আকারেই বাংলাদেশের ফুটবল দল নিয়ে এমন আলোচনা সর্বশেষ হয়তো দেখা গিয়েছিল ২০১৫ সালে বঙ্গবন্ধু কাপে, যখন বাংলাদেশ ফাইনালে উঠেছিল। চট্টগ্রামে সে টুর্নামেন্টেও বাংলাদেশ যত এগিয়েছে, গ্যালারি তত পূর্ণ হয়েছে।
তার চেয়েও বেশি উন্মাদনা এবার দেখা যাচ্ছে হামজা চৌধুরী, ফাহামেদুল ইসলাম, সামিত সোমদের আগমণে। ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে আজ সন্ধ্যা ৭টায় এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচের আগে এমন উন্মাদনারই প্রতিফলন হয়ে এসেছে একাদশ, ট্যাকটিকস নিয়ে এত আলোচনা।
তা শেষ পর্যন্ত একাদশ কী দাঁড়াল? ভুটানের বিপক্ষে গত ৪ জুনের প্রীতি ম্যাচের একাদশে তিনটি বদল এনে আজ সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে বাংলাদেশকে খেলাতে যাচ্ছেন কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। ফিটনেসের অভাবে কিছুটা ধুঁকতে থাকা নিয়মিত অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া একাদশ থেকে বাদ পড়েছেন। আর ভুটান ম্যাচের দিনেই বাংলাদেশে পা রাখা কানাডাপ্রবাসী মিডফিল্ডার সামিত সোমকে নিয়ে আগ্রহের জানান দেওয়া প্রশ্নগুলোর জবাবও মিলেছে একাদশে – হামজা চৌধুরীর পাশে মিডফিল্ডে থাকছেন সামিত।
ভুটান ম্যাচের একাদশ থেকে রক্ষণে একটাই বদল – রাইটব্যাক তাজউদ্দিনের বদলে একাদশে ঢুকেছেন মূলত সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার শাকিল আহাদ তপু। ধারণা করে নেওয়া যায়, সিঙ্গাপুরের দুই উইং থেকে ক্রস এবং সেসব ধরে স্ট্রাইকারদের গোল করে ফেলার প্রবণতা দেখেই ক্রসগুলো আটকাতে কিছুটা ‘ডিফেন্সিভ’ ফুলব্যাক হিসেবে জুনিয়র তপুকে একাদশে রেখেছেন কাবরেরা।
হামজার পাশে কাজেম-সামিতদের আগমণে মাঝমাঠ সাজাতেই বাংলাদেশ কোচ কাবরেরাকে সবচেয়ে মধুর সমস্যায় পড়তে হতো। কাগজে-কলমে দেখে মনে হতে পারে, সে সমস্যার সবচেয়ে যৌক্তিক সমাধানই বের করেছেন কাবরেরা। সিঙ্গাপুরের মাঝমাঠ দারুণ কার্যকরী, তাদের আটকাতে মাঝমাঠে বাড়তি শক্তির দরকার ছিল। হামজার পাশে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হৃদয়কে তাই একাদশে রেখেছেন কাবরেরা। তাঁদের সামনে ‘বল প্রগ্রেশন’ ও প্লেমেকিংয়ের জন্য থাকছেন সামিত সোম ও কাজেম শাহ।
কাবরেরার অধীনে সাধারণত ৪-১-২-১-২ ছকেই বাংলাদেশ খেলেছে এতদিন, যেখানে দুই ফরোয়ার্ড মূলত ফুটবলে প্রাচীন ‘ইনসাইড ফরোয়ার্ডে’র ভূমিকায়ই থাকেন। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে আজও ফর্মেশন একই রেখেছেন কাবরেরা। মাঝমাঠে ডিফেন্সিভ ‘শিল্ড’ হৃদয়ের সামনে দুই মিডফিল্ডারের মধ্যে ডানদিকে হামজা রক্ষণটাও সামলাবেন, বাঁদিকে সামিতের দায়িত্ব থাকবে বল এগিয়ে নেওয়ার। আর তাঁদের সামনে প্লেমেকার হিসেবে থাকবেন কাজেম।
আর দুই ফরোয়ার্ড – যাঁরা মূলত বল মাঝমাঠে বাংলাদেশের দখলে থাকার সময়ে বাইলাইন ধরে এগোতে এগোতে পরে বক্সের দিকে ঢুকবেন, সেই ভূমিকায় বাঁদিকে থাকছেন আরেক প্রবাসী ফুটবলার ফাহামেদুল। আর ডানদিকে রাকিব হোসেন।
বাংলাদেশ একাদশ:
গোলকিপার: মিতুল মারমা
ডিফেন্ডার: শাকিল আহাদ তপু, তারিক কাজী, তপু বর্মন, সাদ উদ্দিন
মিডফিল্ডার: মোহাম্মদ হৃদয়, হামজা চৌধুরী, সামিত সোম, কাজেম শাহ
ফরোয়ার্ড: রাকিব হোসেন, ফাহামেদুল ইসলাম।