ভোলায় চাহিদার চেয়ে তিন গুণ বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হলেও জেলাবাসী লোডশেডিংয়ের দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র ও একটি ট্রান্সফরমার নষ্ট হওয়ায় জেলায় পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাচ্ছে না। উল্টো জাতীয় গ্রিড থেকে আনতে হচ্ছে। ছয় মাসের আগে লোডশেডিং সমস্যার সমাধান দেখছে না কর্তৃপক্ষ।
ভোলা বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইউসুফ বলেন, ভোলার বিদ্যুৎ চাহিদা ১৩০ মেগাওয়াট। সদর উপজেলার ৪০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি এবং বোরহান উদ্দিন উপজেলার ২২৫ ও ২২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার আরও দুইটি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে এই চাহিদা মিটিয়ে বাকি বিদ্যুৎ যায় জাতীয় গ্রিডে। বোরহান উদ্দিনের কেন্দ্র দুটি থেকে ৯০ ও ৪০ মেগাওয়াটের দুইটি ট্রান্সফরমারের সাহায্যে জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো।
কিন্তু ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ৪০ মেগাওয়াটের ট্রান্সফরমারটি নষ্ট হলে বোরহান উদ্দিন থেকে সরবরাহ দাঁড়ায় ৯০ মেগাওয়াট। আর চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি সদরের বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মূল ইউনিটটি নষ্ট হলে সেখান থেকে মিলছে ১০ মেগাওয়াট। এতে জেলায় ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি থাকছে। হচ্ছে লোডশেডিং।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘অব্যবস্থাপনার কারণে আমরা বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। আমাদের কাজকর্ম, লেখাপড়া, ব্যবসা বাণিজ্য সব কিছুই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইউসুফ আরও বলেন, ‘আমরা এখন ন্যাশনাল গ্রিড থেকে, বোরহান উদ্দিন থেকে বিদ্যুৎ নিচ্ছি। গ্রিডের রুলস অনুসারে চাহিদামতো বিদ্যুৎ পাচ্ছি না, লোডশেডিং দিতে বাধ্য হচ্ছি।’
ট্রান্সফরমার কবে চালু হবে অনিশ্চিত। তবে সদরের বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল ইউনিটটি ঠিক করতে আরও ছয় মাস লাগবে।
এ ব্যাপারে ভোলা ভেঞ্চার এনার্জি রিসোর্সেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপক হাফিজুর রহমান বলেন, ‘এর যন্ত্রপাতি বাইর থেকে কিনে আনার জন্য চেস্টা করছি। আশা করছি আগামী পাঁচ থেকে ছয় মাসের মধ্যে প্লান্টটি রান করবে।’
ভোলা জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান জানিয়েছেন, সরকার পর্যায়ে যে জায়গাগুলোতে এ বিষয়টি জানানো দরকার সেখানে জানানো হয়েছে। হয়তো খুব শীঘ্রই ৩৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের টারবাইন সমস্যার সমাধান হবে।
দ্রুত ট্রান্সফরমার ও বিদ্যুৎকেন্দ্র মেরামতের পাশাপাশি ভোলা সদর ও চরফ্যাশনের সাবগ্রিড স্টেশন নির্মাণের কাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছে জেলাবাসী।