চোরাকারবারের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে সুনামগঞ্জের ৫ উপজলা। সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে এ উপজলাগুলোর সীমান্ত দিয়ে আসছে অবৈধ পণ্য। কাপড়, প্রসাধন-সামগ্রী ছাড়াও ঢুকছে মাদকদ্রব্য। গত ৫ মাসে প্রায় ২৪ কোটি টাকার পণ্য জব্দ করেছে বিজিবি। বাঁধা দিলে চোরকারবারিদের হামলার শিকার হচ্ছেন স্থানীয়রা। বিজিবি বলছে, চোরাচালান ঠেকাতে সীমান্তে তৎপর রয়েছেন তারা। নিয়মিত চলছে অভিযান।
জানা গেছে, সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে চোরাই পথে ৩ ডিসেম্বর প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কেজি রসুন আটক করে বিজিবি। ভারতে পাচারের সময় আটক করা পণ্য ফিরিয়ে আনতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বিজিবির ওপর হামলা করে চোরাকারবারিরা। বিজিবির শক্ত প্রতিরোধে জব্দকৃত মালামাল ছিনিয়ে নিতে ব্যর্থ হয় তারা।
শুধু দোয়ারাবাজার নয়, জেলা সদর, তাহিরপুরসহ বিভিন্ন সীমান্তে আগের চেয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এখানকার চোরাকারবারি সিন্ডিকেট। বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচার করছে রসুন, ইলিশসহ নানা পণ্য। আর রাতের আঁধারে সীমান্তের কাঁটাতার গলিয়ে বাংলাদেশে নিয়ে আসছে গরু, চিনিসহ বিভিন্ন ধরণের মাদকদ্রব্য।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই এলাকায় মাদক থেকে শুরু করে যত ধরনের চোরাচালান আছে সটি এই চক্রটি করছে। চোরাকারবারিদের দাপটের কারণে সন্ধ্যার পর একালায় বের হতে পারেন না বলে জানান স্থানীয় অনেকেই। এ থেকে পরিত্রণ চান তারা।
সংঘবদ্ধ চোরাকারবারীদের বাধা দিতে গেলে হামলার শিকার হচ্ছেন স্থানীয়রা। এছাড়া প্রতিবাদ করলে ভাঙচুর করে বাড়িঘর, জানান স্থানীয় জনপ্রতিনিধি।
সুনামগঞ্জের বাংলাবাজারের ইউপি সদস্য আল আমিন বলেন, ‘রসুন মাছ, সুপারি প্রতিনিয়ত যাচ্ছে। আর তারা (চক্র) নামায়ে আনতেছে ফেনসিডিল, ইয়াবা এগুলা।’
গত পাঁচ মাসে সিলেট ৪৮ ও ২৮ বিজিবি ব্যাটালিয়ানের সদস্যরা ২৪ কোটি টাকার চোরাই পণ্য জব্দ করেছে।
সিলেট-৪৮ ব্যাটালিয়ন বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাফিজুর রহমান বলেন, ‘চোরাকারাবারিদের অধিক চোরাচালান জব্দ হওয়ার কারণে তারা কিছুটা ক্ষোভ হয়তো বিজিবির প্রতি রয়েছে। যে কারণে তারা হামলা করার চেষ্টা করে। বিচার বিভাগের মাধ্যমে যদি সঠিকভাবে শাস্তি নিশ্চিত করা হয়, সে ক্ষেত্রে হয়তো এ ধরনের হামলা কিংবা উগ্র পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়তো ভবিষ্যতে হবে না।’
চোরাকারবারি সিন্ডিকেটদের ঠেকাতে সুনামগঞ্জের পাঁচ উপজেলায় প্রায় ৯০ কিলোমিটার সীমান্ত টহল দেন বিজিবি সদস্যরা।