সেকশন

রোববার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২
Independent Television
 

মানুষ কীভাবে ‘গাধা’ হয়? জেনে নিন লক্ষণগুলো

আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৩ পিএম

গাধা প্রকৃতিগতভাবে বেশ পরিশ্রমী একটি প্রাণি। নীরবে ভার বয়ে যাওয়া প্রাণি হিসেবেই এটি পরিচিত বেশি। ঐতিহাসিকভাবে মানুষ গাধাকে এই পরিচয়েই ক্রমে পরিচিত করে তুলেছে। তবে এই বঙ্গে গাধা বলতে শুধু চারপেয়ে প্রাণিকেই বোঝায় না। এখানে প্রচুর দু’পেয়ে মানুষও একই নামে পরিচিতি পায়!

সাধারণত যেসব মানুষকে অন্যরা গাধা বলে ডাকে, সেসব মানুষকে কিছু নির্দিষ্ট কারণেই এমন উপাধি দেওয়া হয়। যেমন, গাধা বলতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বোধবুদ্ধিহীন বা নির্বোধ ব্যক্তিকেই বোঝানো হয়। আবার একেবারেই কান্ডজ্ঞান না থাকা ব্যক্তিকেও গাধা বলে ডাকে অনেকে। সেদিক থেকে বলতে গেলে, এ দেশের যেসব মানুষকে গাধা বলা হয়, তাদের চরিত্র গাধার পুরোপুরি বিপরীত! কারণ প্রাণিকূলের হিসাবে গাধা নাকি পরিশ্রমী ও আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন। অথচ এ দেশের মানুষেরা গাধা বলে স্বগোত্রীয় যাদের অভিহিত করে থাকে, তার পেছনে কারণ থাকে উল্টোটা।

প্রাণি হিসেবে গাধাদের নিয়ে দিবসও চালু করেছে মনুষ্য প্রজাতি। প্রতি বছরের ৮ মে পালিত হয় বিশ্ব গাধা দিবস। ২০১৮ সাল থেকে বিশ্বজুড়ে পালিত হয়ে আসছে এই দিবস। বুঝুন তবে, গাধাকে কতটা ভালোবাসে মানুষ!

বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই দেখতে পাওয়া যায় এই প্রাণী। ব্রিটেনের ইউনিভার্সিটি অব ব্রিস্টলের একটি গবেষণাতে জানানো হয়েছে যে, বিশ্বে চার কোটি ৫৮ লাখ গাধা রয়েছে। তবে প্রাণীটির বিচরণ সবচেয়ে বেশি আফ্রিকা মহাদেশে। ২০২২ সালের গ্লোবাল ডাঙ্কি পপুলেশন অনুযায়ী, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি গাধা রয়েছে ইথিওপিয়াতে। এরপর সবচেয়ে বেশি গাধা আছে সুদান ও শাদে। যদিও আমাদের দেশের বর্তমান বাস্তবতায় যে কোনো রসিক মানুষের মনে এ নিয়ে অবিশ্বাস দানা বাঁধতেই পারে! গাধার পরিমাণে আমরাই বা কম কীসে বলুন?

সে যাক গে। আসুন, আজকে বঙ্গদেশের মানুষরূপী গাধাদের চিনে নেওয়া যাক। অর্থাৎ, বোধবুদ্ধিহীন বা নির্বোধ বা কাণ্ডজ্ঞানহীন মানুষ কীভাবে চিনবেন? এমন মানুষ আমাদের আশেপাশেই ঢের থাকে। আপনি হয়তো মনে মনে ওদের ‘গাধা’ বলেই ডাকেন।

তবে এ ধরনের ‘বাংলার গাধা’ চিনে নেওয়ার কিছু লক্ষণও আছে। কেবল চিনে নেওয়ার অপেক্ষা। এবার তা নিয়েই বরং একটু খোঁজখবর নেওয়া যাক।

যুক্তরাষ্ট্রের বার্কলির ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়াতে অর্থনীতির ইতিহাস পড়াতেন কার্লো এম. সিপোল্লা। ২০০০ সালে ৭৮ বছর বয়সে তিনি মারা যান। এই অধ্যাপক একটি বই লিখেছিলেন। বইটির নাম, ‘দ্য বেসিক ল’স অব হিউম্যান স্টুপিডিটি’। ১৯৭৬ সালে ইতালিতে বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। তৎকালীন সময়ে এই বই বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছিল বইটি। এতে নির্বোধ বা বোধবুদ্ধিহীন প্রকারের মানুষের বিষয়ে বিস্তারিত লিখেছিলেন সিপোল্লা। তাঁর মতে, সমাজের একটি নির্দিষ্ট স্তরেই যে বাংলায় প্রচলিত গাধাপ্রকৃতির মানুষ কেবল থাকে, বিষয়টি কিন্তু তা নয়। বরং সমাজের সকল স্তরের মানুষের মধ্যেই ‘গাধা’ বিদ্যমান। ব্যবসা বা অফিসের বড় কর্তাদের মধ্যে যেমন থাকে, তেমনি একেবারে সাধারণ কর্মীদের মধ্যেও থাকে। থাকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত গবেষক বা স্কুল–কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যেও। অর্থাৎ, সমাজের সকল স্তর ও পেশার মানুষের মধ্যেই ‘গাধা’ বিরাজমান! কোনোটাকেই ছাড় দেওয়ার উপায় আসলে নেই।

এসব মানুষকে চিনে নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু লক্ষণের কথাও বলেছেন কার্লো এম. সিপোল্লা। তাঁর মতে, এমন মানুষদের তুলনামূলক বুদ্ধিমান মানুষেরা ‘নির্বোধ’ ভেবে সাধারণত হেলা করেন। আর এতেই সবচেয়ে বড় সর্বনাশ হয়। কারণ মনুষ্যপ্রজাতির মধ্যকার এই ‘গাধা’গণ সমাজের সবচাইতে ভয়ংকর ব্যক্তিত্ব। এসব মানুষ যেমন নিজের ক্ষতি করে, তেমনি বুদ্ধিমান মানুষেরও ক্ষতি করে অবলীলায়। কারণ এগুলো বোঝার মতো বোধবুদ্ধিই যে তাদের থাকে না! ফলে নিজের নাক কেটে হলেও তারা পরের যাত্রাভঙ্গে পিছপা হয় না। সিপোল্লার মতে, নির্বোধ মানুষের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্যই হলো এই সকলের ক্ষতি করার সক্ষমতা। সুতরাং, এমন মানুষ আশেপাশে পেলে তাকে ‘গাধা’ বলে মেনে নিয়ে সাবধান আপনাকে থাকতেই হবে।

সিপোল্লা আরও বলেছেন, নির্বোধ মানুষেরা নানা ধরনের অযৌক্তিক পদক্ষেপ নেন। ফলে যুক্তির ভিত্তিতে বিচার করা বুদ্ধিমান মানুষেরা তাদের চিহ্নিত করতে দেরি করে ফেলেন। কারণ এভাবে পুরোপুরি অযৌক্তিকভাবেও যে বিচার করে কাজকারবার করা যায়, সেটিই বুদ্ধিমানরা শুরুতে বিশ্বাস করে উঠতে পারেন না। ফলে ‘গাধা’দের চিনতে দেরি হয়ে যায়। আর এই ফাঁকেই ঘটে যায় সর্বনাশ।

যুক্তির পথে যেহেতু ‘নির্বোধ’ মানুষেরা হাঁটেন না, ফলে এক্ষেত্রে বাংলার প্রচলিত একটি প্রবাদকেও বিবেচনায় নিতে পারেন। সেটি হলো, ‘গাধা জল ঘোলা করে খায়’। অর্থাৎ, একটি কাজ হয়তো একটি নির্ধারিত প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করাই অসম্ভব, বা এটি হয়তো পরীক্ষিতভাবে অসম্ভব। কিন্তু, ‘গাধা’রা সেই জলের মতো স্পষ্ট বিষয়টি বুঝতে অক্ষম। ফলে তারা আবার জল ঘোলা করে। এবং এভাবে গাধারা জল ঘোলা করে খায়! এটিও গাধা চেনার একটি উপায় বৈকি।

সিপোল্লা মনে করেন, মনুষ্য প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত সকল জাতি, বর্ণের মধ্যে এ ধরনের মানুষ পাওয়া যায়। কোনো নির্দিষ্ট জাতি, বর্ণ বা ভৌগোলিক অঞ্চলের মানুষকে কেবল এই দোষে দুষ্ট বলা যাবে না। এমনকি নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের মধ্যেও ‘গাধা’ আছে বলে মনে করেন সিপোল্লা। তাঁর মতে, এ ধরনের মানুষ জন্মগতভাবেই এমন প্রকৃতির হন। যে ধরনের ব্যক্তি ক্রমাগতভাবে কোনো যৌক্তিক কারণ ব্যতিরেকেই অন্যের লজ্জার কারণ হয়ে দাঁড়ান, তিনি আসলেই নির্বোধ।

আবার গাধা প্রকৃতির ব্যক্তি চেনার আরেকটি বড় লক্ষণ হলো হয়রানি। এমন কোনো মানুষকে যদি আপনার আশেপাশে পান, যাদের কারণে আপনি প্রতিনিয়ত হয়রানিতে পড়ছেন এবং কোনো লাভের চিন্তা না করেই সেই ব্যক্তি যদি ব্যক্তিগত ও পেশাগত পরিসরে আপনাকে কেবল হয়রানিই করে যান, তবে বুঝতে হবে আপনি ‘গাধা’র পাল্লায় পড়েছেন। সাধারণত ব্যক্তি বা কর্মক্ষেত্রে এ ধরনের মানুষকে আমরা একটু অন্য চোখে দেখি। কেউ কেউ অতি বুদ্ধিমান হিসেবেও ভাবেন। তবে অধ্যাপক সিপোল্লা মনে করেন, আসলে ওই হয়রানির কারণ ব্যক্তিটি বোধবুদ্ধিহীন।

সমস্যা হলো, এ ধরনের মানুষ যখন ক্ষমতায় আরোহন করে। এই ক্ষমতা পেশা ও ব্যক্তি—দুই জীবনেই হতে পারে। ক্ষমতার সমীকরণ যদি মানেন, তবে নিশ্চয়ই জানেন যে, ক্ষমতার ব্যবহার পরিবার থেকে পেশা—সবখানেই আছে। সর্বক্ষেত্রেই আছে উঁচু–নিচু। সিপোল্লা বলছেন, যখন নির্বোধ মানুষেরা ক্ষমতা পেয়ে যায়, তখন শুরু হয় তুর্কি নাচন। হুমকির মুখে পড়ে সবকিছু। আর এই জায়গাতেই গবেষকেরা উল্লেখ করছেন ডানিং–ক্রুগার ইফেক্টের কথা। গত শতকেই এর আবিষ্কার। বলা হয়ে থাকে, যখন কোনো ব্যক্তি নিজের আসল জ্ঞান বা দক্ষতার পর্যায় বা মাত্রা বুঝতে না পেরে নিজেকে আরও বড় সক্ষমতার মানুষ হিসেবে ভাবতে শুরু করে, তখনই এটি হয়ে দাঁড়ায় ডানিং–ক্রুগার ইফেক্ট। এটি আসলে এক ধরনের কগনিটিভ বায়াস। এতে একজন কম দক্ষতার মানুষ নিজেকে ‘ওভারএস্টিমেট’ করে। আর এর উল্টোদিকেই একজন সত্যিকারের সক্ষম ব্যক্তি নিজের ক্ষমতাকে বুঝতে না পেরে নিজেকে ‘আন্ডারএস্টিমেট’ করে। এভাবে সমাজে ‘গাধা’রা পূজনীয় হয়ে ওঠে! এমন ঘরানার ব্যক্তি আশেপাশে পেলে হতাশায় হারিয়ে না গিয়ে তাই দয়া করে লক্ষণের মিল খুঁজে নেবেন একটু। কে জানে, ‘গাধা’ মিলেও যেতে পারে!

তবে হ্যাঁ, গাধার হাত বা পা (প্রকৃতিতে হোমো সেপিয়েন্স বোঝালে দুটিই হতে পারে) থেকে আপনি মুক্তি পাবেন না কখনোই। কারণ এই পৃথিবীর প্রতিটি কোণায় নাকি অংশগত হিসাবে সমান পরিমাণ গাধা প্রকৃতির মানুষ মজুত আছে! সুতরাং, গাধাদের থেকে মুক্তির বদলে বরং চিনে নিয়ে দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করতে পারেন। তাতে একটু হলেও হয়তো শান্তি পাবেন!

তথ্যসূত্র: মিডিয়াম ডট কম, দ্য ওকল্যান্ড প্রেস, রয়টার্স, ‘দ্য বেসিক ল’স অব হিউম্যান স্টুপিডিটি’, বিজনেস ইনসাইডার ও সাইকোলজি টুডে ডট কম

জাতিসংঘ ২১ মে আন্তর্জাতিক চা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে। শুধু অর্থনীতিক গুরুত্ব নয়, এই দিনটি চা-কে বিশ্ব সংস্কৃতির অংশ হিসেবেও স্বীকৃতি দেয়। তিব্বতের পো চা থেকে শুরু করে ইংলিশ ব্রেকফাস্ট চা পর্যন্ত,...
গরমের দিনে মোজা ছাড়া হাঁটা মানেই শুধু আরাম নয়। স্টাইলেও আসতে পারে একটুখানি পরিবর্তন। তাই এই ‘নো সক ডে’ হোক নতুন ফ্যাশন চর্চার সূচনা। যেখানে পা থাকবে খোলা, আর মুড থাকবে তরতাজা। আমরা অনেক সময়ই মোজা...
এই মা দিবসে ঢাকা রিজেন্সি মায়ের জন্য এক বিশেষ আয়োজন করেছে। এই দিনটিতে বিশেষ আয়োজনে থাকছে ‘ক্যান্ডেল লাইট ডিনার ডেট উইথ মম’। একটি ভালোবাসায় মোড়ানো সন্ধ্যা কাটাতে পারবেন। গুনতে হবে ৬ হাজার ৬৬৬ টাকা।...
সত্যি বলতে, নারী দিবসের জন্য ঠিকঠাক উপহার বেছে নেওয়া অনেক সময় ধাঁধার মতো মনে হয়। ফুল? খুবই সাধারণ। চকলেট? সুস্বাদু, কিন্তু মুহূর্তেই শেষ হয়ে যায়। এই ৮ মার্চ, কেন উপহারের ক্ষেত্রে একটু আলাদা...
টটেনহাম হটস্পার ২০ বছর বয়সী ফ্রেঞ্চ ফরোয়ার্ড ম্যাথিস তেলকে পাকাপাকিভাবে ক্লাবে আনতে যাচ্ছে। গত পাঁচ মাস ধারে টটেনহামের জার্সিতেই খেলা এই ফরোয়ার্ডের জন্য শর্তসাপেক্ষে বায়ার্ন মিউনিখকে ৪ কোটি ইউরো...
ইরান দাবি করেছে, সম্প্রতি ইসরায়েলের ওপর চালানো ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তারা তাদের নতুন ‘হাজ কাসেম’ নামের একটি ম্যানুভারেবল ব্যালিস্টিক মিসাইল ব্যবহার করেছে। রাষ্ট্রীয় সংস্থা ফারস নিউজ জানিয়েছে, শনিবার...
লোডিং...

এলাকার খবর

 
By clicking ”Accept”, you agree to the storing of cookies on your device to enhance site navigation, analyze site usage, and improve marketing.