আগামী বছরে এলডিসি থেকে উত্তরণ হবে বাংলাদেশের। উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। যদিও, দেশে বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরিতে এবারের বাজেটে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়নি বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। ফলে, বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ার আশঙ্কা তাদের। অর্থনীতিবিদদের মতে, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ প্রক্রিয়া টেকসই করতে অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা অর্জন করতে হবে।
২০২৬ সালের নভেম্বরে এলডিসি থেকে উত্তরণের পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ। যদিও বর্তমান অবস্থায় এলডিসি উত্তরণ বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
এর কারণ হিসেবে তারা বলছেন, গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত অনেক কারখানা বন্ধের ফলে কর্মসংস্থান কমেছে। এ ছাড়া, ব্যাংকঋণের সুদের হার ১৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। তাই, দেশে বিনিয়োগের পরিবেশ ও সামগ্রিক ব্যবসা পরিস্থিতি নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তায় তারা।
ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরামের সাবেক সভাপতি হুমায়ুন রশিদ এ ব্যাপারে বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে যা নেওয়ার কথা অনেক আগে থেকেই সেগুলো কিন্তু ভিজিবল হওয়ার কথা। সেই জায়গাটুকু কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি না। শুধুমাত্র যে ট্যারিফ, এমনটা নয়। অভ্যন্তরীণ যে ইনসেনটিভ, সেই জায়গাও উঠে যাবে। অতএব ব্যবসায়ীদেরকে ব্যবসায়ী প্রতিযোগী হওয়ার জন্য কী করা উচিত? সেটা হচ্ছে যে, আমাদের মূল্যস্ফীতিকে কমাতে হবে। কারণ মূল্যস্ফীতি যদি আপনি ২-৪ শতাংশের মধ্যে রাখতে পারেন, তখন কিন্তু মূলধনের জন্য খরচটা অনেক কমিয়ে রাখা সম্ভব।’
যদিও, এলডিসি উত্তরণের পদক্ষেপ হিসেবে বাজেটে ৮৪টি পণ্যের ওপর বিদ্যমান ন্যূনতম মূল্য প্রত্যাহার করাসহ ২৩টি পণ্যের ক্ষেত্রে তা পুনর্নির্ধারণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে, অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই পদক্ষেপ এলডিসি উত্তরণের জন্য যথেষ্ট নয়।
অর্থনীতিবিদ শাহাদাত হোসেন সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা এলডিসি গ্রেজুয়েট করব ভালো কথা। আমাদের খুব আর্লি হয়ে যাচ্ছে। এই চ্যালেঞ্জটা আমরা অনেক আর্লি নিচ্ছি। এই চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করার জন্য আমাদের কী কী করণীয়–সেই জায়গাটা অনেক বেশি ফোকাসড হওয়া উচিত। সেটার দিকনির্দেশনা এই বাজেটেও আসা উচিত ছিল, যেটা আমরা পাইনি।’
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, এলডিসি উত্তরণের পর দেশের রপ্তানি পণ্যে শুল্ক আরোপিত হলে রপ্তানি সাড়ে ৫ থেকে ১৪ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। এই বাস্তবতায় দেশের রপ্তানি সক্ষমতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই বলে মনে করে সংস্থাটি।