স্কুলে যেতে ইচ্ছা না করলেই, পেট ব্যথার বায়না। পড়তে বসতে বললেই, মাথা ব্যথা। এই লক্ষণগুলো নিশ্চয় আপনার চেনা লাগছে? বেশিরভাগ বাবা-মা সন্তানদের এমন মিথ্যা বাহানা ঠিক ধরে ফেলেন। অনেকে বাবা-মা সন্তানের মিথ্যা কথার ফুলঝুরিতে হিমশিম খেয়ে যান। সন্তানের এই মিথ্যা থামাতে অনেক সময় কঠোর হন অভিভাবক। আবার কেউ কেউ উড়িয়েও দেন। কিন্তু বকাবকি করেই কি এই সমস্যার সমাধান সম্ভব?
বড়দের সঙ্গে ছোটদের জগতের বেশ পার্থক্য রয়েছে। বড়দের কাছে মিথ্যা কথা মানে, গর্হিত অপরাধ। তবে শিশুদের কাছে কিন্তু তা একেবারেই নয়। তারা থাকে কল্পনার জগতে। তাই সাদাকালোর বিভাজন তাদের বোঝার কথাও নয়। শিশুরা তেমন গুছিয়ে মিথ্যা বলতে পারে না। তাই খুব সহজেই সেসব ধরতে পারেন অভিভাবকরা। শিশুর সঙ্গে তাই রাগারাগি না করে তাকে বোঝাতে হবে। এই মিথ্যা কথা না বলতে। তেমনই সঠিক কৌশলে তার স্বভাব বদলানোর চেষ্টা করতে হবে।
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে শিশুর স্বভাবেও পরিবর্তন আসে। অনেক সময় শিশুরা বাবা-মায়ের বকা খাওয়ার হাত থেকে বাঁচতে ছোট ছোট মিথ্যা বলে। এটা শিশুদের খুব সাধারণ একটি প্রবণতা। তাই এই বিষয়টি নিয়ে খুব বেশি কড়াকড়ি করবেন না, এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। কড়া শাসনের বদলে সন্তানকে ভালোভাবে বোঝাতে হবে। তাতেই দেখবেন কাজ হবে।
তবে যদি দেখেন দিনকেদিন তাদের মিথ্যা বলার প্রবণতা বাড়ছে, তবে তা চিন্তার বিষয়। সেক্ষেত্রে এখনই সতর্ক হতে হবে। এই বিষয়টি আপনি খুব সহজে বুঝতে পারবেন। যদি দেখেন খুব সাধারণ বিষয় নিয়ে শিশু মিথ্যে বলছে বা কারও বিরুদ্ধে সবসময় অভিযোগ করছে, তাহলে ভালো করে খতিয়ে দেখুন। তবে সন্তানকে কখনই তার সীমা অতিক্রম করতে দেবেন না।
বাড়িতে বাবা-মা, আর স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকার শেখানোর পদ্ধতি এক নয়। শিশু বাবা-মায়ের কাছে সব কথা বলতে পারবে, এটাই স্বাভাবিক। স্কুলের শিক্ষক বকাবকি করে না বলে সে ভাল, আর আপনি শাসন করলে খারাপ-এমনটি যেন সে না মনে করে। কারও নামে বানিয়ে কথা বলার অভ্যাসকে একদমই প্রশ্রয় দিবেন না।
তাই বলে সবসময় শাসনে রাখবেন না। শিশুকে তার নিজের মতো করে বেড়ে উঠতে দিন। জোর করে কোনও কিছু চাপিয়ে দেবেন না। শুধু প্রয়োজন মতো সঠিক রাস্তা দেখিয়ে যান। ভুল করলে হাত ধরে শিখিয়ে দিন। আপনার এত চেষ্টার পরেও যদি সন্তান মিথ্যে কথা বলা না ছাড়ে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারণ এখন ঠিক করতে না পারলে পরবর্তীতে তা অভ্যাসে পরিণত হবে।