সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষ হয়েছে প্রায় এক বছর হতে চলল। গত বছরের জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সহ-আয়োজক হিসেবে বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করে আলোচনায় এসেছিল যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির আলোচনায় আসার অন্যতম কারণ ছিল, বিশ্বকাপের জন্যই অস্থায়ী স্টেডিয়াম নির্মাণ।
নিউ ইয়র্কের আইজেনহাওয়ার পার্কে ৩৪ হাজার আসন বিশিষ্ট আস্ত এক স্টেডিয়ামই বানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে সে সময় বেশ প্রশংসাও পেয়েছিল স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ। এ ভেন্যুতে বিশ্বকাপের ৮টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়, এর মধ্যে বাংলাদেশও একটি ম্যাচ খেলেছে। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচটিও হয়েছিল এ মাঠে।
১৯ একর জায়গা নিয়ে নির্মিত অস্থায়ী স্টেডিয়ামটি বিশ্বকাপ শেষে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করে দায়িত্বরত নাসাউ কাউন্টি কর্তৃপক্ষকে পার্কের আগের অবস্থা ফিরিয়ে দেওয়ার চুক্তি করেছিল স্টেডিয়ামের পরিচালকেরা । কিন্তু নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে শর্ত পূরণ করতে পারেনি তারা। এ নিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে নাসাউ কাউন্টি সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা দায়ের করা হয়।
এবার দেশটির সংবাদমাধ্যম সিবিএস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এখনো পার্কটি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে পারেনি স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ। স্টেডিয়ামের অবকাঠামো সরিয়ে নিলেও চারপাশে তারকাঁটার বেড়া দেখা গেছে। আগামী সেপ্টেম্বরের আগে কোনোভাবেই সে বেড়া খোলা সম্ভব নয় বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। আর এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
বিশ্বকাপে এ স্টেডিয়ামের প্রতিনিধিত্বকারী কাওয়ান, ডিবায়েটস, আব্রাহাম ও শেপার্ড এলএলপির নামে দায়েরকৃত মামলায় এসক্রো হিসেবে ২০ লাখ ডলার আটকে রেখেছে ম্যানহাটনের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। তারা আদালতের কাছে অনুরোধ করেছে, ব্যবহার ও দখলের অনুমতিপত্রের শর্ত লঙ্ঘনের কারণে তাদের কাছে রাখা ২০ লাখ মূল্যের এসক্রো তহবিল কাউন্টির কাছে যাতে হস্তান্তর করা হয়।
যদিও মামলা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি কাউন্টির ডেপুটি অ্যাটর্নি ডেব ডেবাউন। তবে তিনি বলেছেন, ‘এ সমস্যা সমাধানে দুপক্ষের মধ্যে আলোচনা চলছে। দ্রুত এর একটা সুরাহা হবে বলে দুপক্ষই আশাবাদী। (আইজেনহাওয়ার পুনরুদ্ধারের) কাজ অব্যাহত আছে। আশা করছি, মামলা সমাপ্তির সময়সূচিতে এটা তেমন কোনো প্রভাব ফেলবে না।’
২০ লাখ ডলার এসক্রো প্রসঙ্গে ডেব বলেছেন, ‘পার্ক মেরামত কাজের গ্যারান্টি হিসেবে সেটা রেখে দেওয়া হয়েছে। কাজ পুরোপুরি শেষ হলে এটি সমন্বয় করা হবে।’
এতদিনেও পার্ক অবমুক্ত করা হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় বাসিন্দা লরনা মুরডাউগ বলেছেন, ‘অনেকদিন হয়ে গেল, আমরা এখানে হাঁটতে পারি না। শীতকালেও এটা যেমন ছিল, গ্রীষ্মেও একই আছে। আর কতদিন এভাবে রাখবে?’
আরেক স্থানীয় বলেছেন, ‘ম্যাচের আগে এখানে ঘাসগুলো সুন্দর ছিল। এখন দেখেন, কিছুই নেই। এগুলোই সমস্যা। ছোট বাচ্চা-কাচ্চাদের কথা বিবেচনা করে হলেও পার্ক দ্রুত আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়া উচিত।’