মানুষ মাত্রই প্রেমে পড়ে! প্রেমের জন্যই জীবনটাকে সুন্দর মনে হয়। স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্ধু বা সহপাঠীদের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি সময় কাটানো হয়। চাকরিজীবনে প্রবেশের পর সেই সময়ে এসে ভাগ নেয় অফিসের সহকর্মীরা।
অফিসগামীদের দিনের তিনভাগের একভাগ সহকর্মীদের সঙ্গেই কেটে যায়। এ সময় বিশেষ কারও প্রতি মন আর্দ্র হয়ে ওঠা অসম্ভব নয়। তবে ঐ পাশের মানুষটির মনেও যে একই রকম অনুভূতি তৈরি হবে, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই; বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাই ফিরিয়ে দিতে হয় প্রেমের প্রস্তাব!
সহকর্মীর কাছে মনের খবর পৌঁছানো এবং মন সায় না দিলে প্রত্যাখ্যান করা, উভয়ই অস্বস্তির। এতে অফিসের স্বাভাবিক কাজের গতি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। জেনে নিন, পেশাদারিত্ব বজায় রেখে কীভাবে সহকর্মীর প্রেমের প্রস্তাব নাকচ করবেন তার উপায়।
স্পষ্ট বলুন
অনুভূতি তৈরি হলে যেমন স্পষ্ট করে বলা জরুরি, ঠিক তেমনই যদি অনুভূতি না থাকে, সেটা জানিয়ে দেওয়ার মধ্যেও কোনো ভুল নেই।
ওপাশের মানুষটির প্রত্যাশার পারদ বৃদ্ধির আগেই স্পষ্ট ভাষায় নিজের মতামত জানিয়ে দিন; তবে বিনয় ধরে রাখতে ভুলবেন না। তাঁকে বুঝিয়ে বলুন যে, আপনি পেশাদারিত্ব বজায় রাখতে আগ্রহী এবং কোনো ধরণের সম্পর্কে যেতে চান না। জীবনের এ পর্যায়ে আপনার যৌথতায় জড়ানোর মতো মানসিক অবস্থায় নেই। আবার যদি আপনি কারও সঙ্গে ইতিমধ্যে সম্পর্কে থেকে থাকেন, তবে সেটিও লুকিয়ে রাখবেন না।
বিস্তারিত খুলে বলুন
নাটক-সিনেমাতে প্রায়ই দেখা যায়, প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পরেও অনেকে ঠিকই আশা জিইয়ে রাখে। আপনি কাউকেই নিজের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ব্যাখ্যা দিতে বাধ্য নন; তবে এই পরিস্থিতিতে আপনি একটি বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিলে কিন্তু মন্দ হয় না।
প্রেমের প্রস্তাব আনা সহকর্মীটিকে জানিয়ে দিন, কেন আপনি তাঁকে গ্রহণ করতে পারছেন না। আপনি অন্য কারও প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, তাই তাকে ছাড়া অন্য কারো সঙ্গে সম্পর্ক এগোতে আগ্রহী নন; কিংবা এই মুহূর্তে ক্যারিয়ারের অগ্রাধিকার আপনার কাছে সবচেয়ে বেশি, অথবা অফিসের নীতির বাইরে আপনি কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়াবেন না- কারণ যাই হোক, সহকর্মীকে সব বিস্তারিত খুলে বলুন।
ভরসা রাখুন বন্ধুত্বে
অনেকদিন একসঙ্গে কাজের ফলে বহু সহকর্মী একে অপরের ভালো বন্ধু হয়ে ওঠেন। তাদেরই কেউ যখন প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বসেন, তখন চাইলেও মুখের উপর ‘না’ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। সেক্ষেত্রে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করতে অসুবিধা হলে লিখে জানাতে পারেন মনের কথা, কিংবা সাহায্য নিতে পারেন অন্য বন্ধু বা সহকর্মীদের। একসঙ্গে সবাই মিলে ভালো কোনো সিনেমা দেখতে যেতে পারেন, বা কারও বাসায় ওয়ান ডিশ পার্টির আয়োজন হতে পারে। এরপর সেখানে খুলে বলুন সব।
কখনও কখনও এসব ঘটনা থেকে অফিসে নানা ধরনের কানাঘুষা হয়, নানা গুজব ডালপালা মেলে। এতে উভয় পক্ষেরই সুনাম ক্ষুণ্ন হতে পারে। তাছাড়া অফিসের তারা আর আগের মতো স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে নাও পারেন। কাজের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে তখন বাকি সহকর্মীরাও উদ্যোগী হয়ে এগিয়ে এলে পরিস্থিতি দ্রুতই সামলে ওঠা যাবে।
তথ্যসূত্র: উইকিহাও