ইসরায়েলে ভূখণ্ডে ইরানের ড্রোন হামলার কয়েক ঘণ্টা পর আজ শুক্রবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারি উড়োজাহাজ এথেন্সের বিমানবন্দরে দেখা গেছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে নেতানিয়াহুর ‘পালিয়ে যাওয়ার’ গুঞ্জন। তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।
টিআরটি ওয়ার্ল্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উড়োজাহাজ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ফ্লাইট রাডার টুয়েন্টি ফোরের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের ব্যবহারকারীরা নেতানিয়াহুর উড়োজাহাজের ফ্লাইটের রুট, সময় এবং গ্রিসে শেষ অবতরণ ট্র্যাক করার দাবি করেছেন। তাঁদের মতে, নেতানিয়াহুকে বহনকারী উড়োজাহাজ ‘উইং অফ জিওন’ আজ শুক্রবার বিকেলে এথেন্স বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে।
টিআরটি ওয়ার্ল্ড বলছে, উড়োজাহাজটিতে নেতানিয়াহু কিংবা তাঁর পরিবারের কেউ ছিলেন কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। নেতানিয়াহুর বর্তমান অবস্থান সম্পর্কেও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ কিছু জানায়নি।
বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, নিরাপত্তা সতর্কতার অংশ হিসেবে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ হয়তো দেশটির শীর্ষ ব্যক্তিত্বদের জন্য এই ব্যবস্থা নিয়েছে।
এ দিকে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ইরনা দাবি করেছে, তেহরানে হামলার পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে অজ্ঞাত কোনো স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে গ্রিসে নেওয়া হয়েছে।
এর আগে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম নেতানিয়াহুর উড়োজাহাজের একটি ছবি প্রকাশ করে। ছবিতে অধিকৃত এলাকার বাইরে দুটি জঙ্গি বিমানের পাহারায় নেতানিয়াহুর উড়োজাহাজকে অজ্ঞাত গন্তব্যের দিকে চলে যেতে দেখা গেছে।
ইসরায়েলি টেলিভিশন চ্যানেল১২ জানিয়েছে, বিমানটি গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে অবতরণ করেছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, আজ ভোরে ‘অপারেশন রাইসিং লায়ন’ নাম দিয়ে তেহরানে হামলা চালায় ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী বলেছে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ব্যর্থ করে দিতেই তারা এই হামলা চালিয়েছে।
এ হামলার প্রতিক্রিয়ায় পরে ইসরায়েলে ১০০টি ড্রোন ছুড়েছে ইরান। সার্বিক পরিস্থিতিতে ইসরায়েলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
হামলা অব্যাহত রাখারা ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেছেন, হামলা যতক্ষণ প্রয়োজন ততক্ষণই চালানো হবে।
হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান কঠোর বার্তা দিয়েছে। দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ‘তিক্ত ও যন্ত্রণাদায়ক’ পরিণতির জন্য ইসরায়েলকে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন। আর হামলার পেছেন আমেরিকার কোনো হাত নেই দাবি করে ইসরায়েলের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘ইরান যদি প্রতিশোধ নেয় তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে।’