মার্কিন ও ইসরায়েলি আগ্রাসন সফলতার সাথে মোকাবিলা করায় সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি ও ইরান সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা আরও বেড়েছে বলে দাবি করেছেন দেশটির রাষ্ট্রদূত মানসুর চাভোশি। ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনকে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা জানান। তিনি জানান, ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে গেলেও যে কোনো হামলার পাল্টা জবাব দিতে প্রস্তুত ইরান।
শুরুর দিকে যুদ্ধ ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও ১০ দিনের মাথায় এতে জড়িয়ে পড়ে আমেরিকা। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় মার্কিন বাহিনী। পাল্টা জবাবে কাতার-ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে প্রতিশোধমূলক হামলা চালায় তেহরান।
এর ঠিক কয়েক ঘণ্টার মাথায় যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এতে সাড়া দেয় ইরান-ইসরায়েল। কিন্তু যেই পারমাণবিক অস্ত্রের কথা বলে এই হামলার সূত্রপাত, ইরানের দাবি তারা কখনই এই ধরনের চেষ্টা করেনি। বরং শান্তিপূর্ণ উদ্দেশে পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে আসছিল।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত মানসুর চাভোশি বলেন, যত বাধাই আসুক, এই বৈধ অধিকার থেকে তার দেশ কখনই সরে আসবে না।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘ইরানে কখনো কোনো সক্রিয় পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির অস্তিত্ব প্রমাণিত হয়নি। সুতরাং আমেরিকা ও ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠীর এই আগ্রাসন আন্তর্জাতিক ও আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে কোনো বৈধতা বা গ্রহণযোগ্যতা রাখে না। এই আগ্রাসী পদক্ষেপগুলো ইরানের শাসনব্যবস্থার প্রতি জনগণের সংহতি আরও সুদৃঢ় করেছে। আমাদের মাতৃভূমির বিরুদ্ধে যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’
যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ইসরায়েল মেনে চলছে কি-না তা পর্যবেক্ষণ করা হবে বলেও জানান তিনি। মানসুর চাভোশি জানান, যদি আবারও ইসরায়েল হামলা চালায় তখন বসে থাকবে না ইরান।
মানসুর চাভোশি বলেন, ‘আমরা কখনই যুদ্ধ শুরু করিনি। ইসরায়েলই প্রথমে আগ্রাসন চালায়। আমরা শুধু আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা আবারও বলছি, ইসরায়েল হামলা বন্ধ করলে আমরা কিছুই করবো না। কিন্তু যদি আমাদের ওপর আবার কেউ আগ্রাসন চালায়, তবে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে তা প্রতিহত করা হবে। পাল্টা হামলা চালাতে ইরান দ্বিধাবোধ করবে না।’
হরমুজ প্রণালি বন্ধে ইরানের সংসদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘পরিস্থিতি বিবেচনায়, দেশের সর্বোচ্চ পর্যায় আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’
এ সময় তিনি আশা করেন, এ ধরনের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সব সময় সোচ্চার থাকবে।