সেকশন

মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২
Independent Television
 

আল জাজিরার বিশ্লেষণ

ইরানের কোন কোন তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা করেছে ইসরায়েল, ক্ষতি হলো কতটুকু?

আপডেট : ১৬ জুন ২০২৫, ০২:১৪ পিএম

ইরানের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তেল ও গ্যাসের স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। গত কয়েক দশক ধরে মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই দেশের মধ্যে চরম বৈরিতাপূর্ণ সম্পর্ক থাকলেও এবারই প্রথম এ ধরনের হামলার ঘটনা ঘটল। এর ফলে ইসরায়েল–ইরান সংঘাত সারা মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে এবং জ্বালানি তেলের বিশ্ববাজারে অস্থিরতা তৈরির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

গত শনিবার রাতে ইরানের জ্বালানি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইরানের একটি প্রধান জ্বালানি ডিপোতে হামলা করেছে ইসরায়েল। এ ছাড়া রাজধানী তেহরানের আরেকটি তেল শোধনাগারেও আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। একই সময়ে কাতার সঙ্গে যৌথভাবে পরিচালিত গ্যাসক্ষেত্র ‘সাউথ পার্স’–এর উৎপাদন স্থগিত করে ইরান। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্যাসক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত।

গত ১৩ জুন ভোররাত ৩টার দিকে ইরানে হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েলি পক্ষে বলা হয়েছে, অদূর ভবিষ্যতে ইসরায়েল ও এর বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্রসহ ড্রোন হামলার আশঙ্কা থেকে ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় আগাম প্রতিরোধমূলক হামলা চালানো হয়েছে। ওই হামলা এখনো অব্যাহত রয়েছে। জবাবে ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালাচ্ছে ইরানও।

আজ চতুর্থ দিনে গড়াল ইরান–ইসরায়েলের সংঘাত। ইসরায়েলের হামলায় ইরানে এখন পর্যন্ত অন্তত ২২৪ জন নিহত হয়েছে। আর ইসরায়েলে ইরানের হামলায় নিহত হয়েছে অন্তত ১৩ জন।

ইরানের কোন কোন জ্বালানি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে? 
যুক্তরাষ্ট্রের এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ইআইএ) জানিয়েছে, ইরান বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস মজুতকারী দেশ। এ ছাড়া ইরান বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মজুতকারী দেশ। ফলে দীর্ঘদিন ধরেই ইরানের জ্বালানি অবকাঠামোগুলোকে নিশানায় রেখেছে ইসরায়েল। শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের চাপের কারণে এতদিন ইসরায়েল এই স্থাপনাগুলোতে হামলা চালায়নি। যুক্তরাষ্ট্র ভালো করেই জানে, ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলো ধ্বংস হলে সারা বিশ্বের জ্বালানি তেলের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাবে এবং বিশ্ব অর্থনীতিই হুমকির মুখে পড়বে।

কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। অবশেষে ইসরায়েল হামলা করেই বসল এবং তা যুক্তরাষ্ট্রের প্রচ্ছন্ন ইন্ধনেই।

গত শনিবার রাতে ইরানের শাহরান জ্বালানি ও গ্যাস ডিপোতে এবং তেহরান রিফাইনারিতে হামলা চালায় ইসরায়েল। ইরানের জ্বালানি মন্ত্রণালয় এ হামলার কথা স্বীকার করেছে।

এ ছাড়া বুশেহর প্রদেশের উপকূলে অবস্থিত সাউথ পার্স গ্যাসক্ষেত্রেও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে ইরানের দুই-তৃতীয়াংশ গ্যাস উৎপাদিত হয়। ইরান এই গ্যাসক্ষেত্রটি প্রতিবেশি দেশ কাতারের সঙ্গে পরিচালনা করে। ইরানের অংশে এটির নাম ‘নর্থ ফিল্ড’।

ইরানের প্রধান প্রধান তেল ও গ্যাস স্থাপনা। ছবি: আল জাজিরার সৌজন্যেইরানের আধা সরকারি সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, ইসরায়েল ইরানের ফেজ–১৪ প্রাকৃতিক গ্যাস প্রকিয়াকরণ স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে প্রতিদিন ১ কোটি ২০ লাখ ঘনমিটার গ্যাস উৎপাদন করে ইরান।

অন্য আরেকটি হামলায় ইসরায়েল ইরানের ফাজর জাম গ্যাস প্ল্যান্টে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছে। এই প্ল্যান্টটি সাউথ পার্স থেকে পাওয়া জ্বালানি প্রক্রিয়াজাত করে।

জ্বালানি স্থাপনাগুলো কেন এত গুরুত্বপূর্ণ
শাহরান তেল ডিপোর ধারণক্ষতা প্রায় ২৬ কোটি লিটার। এর মাধ্যমে উত্তর তেহরানের বিভিন্ন টার্মিনালে পেট্রোল, ডিজেল এবং বিমানের জ্বালানি (অ্যাভিয়েশন ফুয়েল) সরবরাহ করা হয়।

এদিকে তেহরান রিফাইনারির ধারণ ক্ষমতা ২ লাখ ২৫ হাজার ব্যারেল। এটি ইরানের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তেল শোধনাগার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই তেল শোধানাগার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে ইরানের সবচেয়ে জনবহুল এবং অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে জ্বালানি সরবরাহ মারাত্মকভাবে ব্যহত হবে।

অন্যদিকে সাউথ পার্স গ্যাসক্ষেত্রে আনুমানিক ১ হাজার ২৬০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট উত্তোলনযোগ্য গ্যাস রয়েছে, যা বিশ্বের মোট মজুতের প্রায় ২০ শতাংশ। ইসরায়েলি হামলার কারণে এই গ্যাসক্ষেত্রে উৎপাদন বন্ধ রেখেছে ইরান।

আর বুশেহর প্রদেশে অবস্থিত ফজর-ই-জাম গ্যাস শোধনাগারটিও বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এখানে ইসরায়েলি হামলার কারণে ইরানের অভ্যন্তরীণ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। সরকারের হিসাব অনুযায়ী, ইরানে ব্ল্যাকআউট বা লোডশেডিংয়ের কারণে অর্থনীতিতে প্রতিদিন প্রায় ২৫০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়।

অস্থিতিশীল হতে পারে বিশ্ববাজার
ইসরায়েল হামলা বন্ধ না করলে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে ইরান। ইরান যদি সত্যই এই পদক্ষেপ নেয়, তাহলে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম আকাশচুম্বী হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকেরা।

হরমুজ প্রণালী হচ্ছে, পারস্য উপসাগরে প্রবেশের একমাত্র সামুদ্রিক পথ। এ পথ দিয়ে বিশ্বের মোট তেল ব্যবহারের প্রায় ২০ শতাংশ রপ্তানি হয়। এই প্রণালীর একপাশে রয়েছে ইরান এবং অন্যপাশে রয়েছে ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।

মার্কিন এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ইআইএ) এটিকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তেল পরিবহনের চোকপয়েন্ট’ হিসেবে অভিহিত করেছে।

গত ১৩ জুন ইরানের ইসরায়েলি হামলার পরপরই তেলের দাম ৯ শতাংশ বেড়ে গিয়েছিল। এখন তেলের বাজার কিছুটা স্থিতিশীল থাকলেও বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, আজ সোমবার থেকে তেলের দাম আবার ঊর্ধ্বমূখী হবে।

টাইমলাইন: মধ্যপ্রাচ্য সংকট
২৫ জুন ২০২৫, ১৭:০৮
মার্কিন হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি, কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গোয়েন্দা প্রতিবেদনের বরাতে এ তথ্য দিয়েছে বেশকিছু মার্কিন সংবাদমাধ্যম। এমন ঘটনা সত্য হলে ইরানের পরবর্তী...
গত ১১–১২ দিনের বিধ্বংসী যুদ্ধ। শুরু হয়েছিল ইরানে ইসরায়েলের হামলার মাধ্যমে। পরে জড়াল আমেরিকা। এই যুদ্ধের কারণ ‘ইরান পরমাণু বোমা তৈরির দ্বারপ্রান্তে’। অভিযোগটা নেতানিয়াহু ও ট্রাম্পের, যা ডাহা মিথ্যা।...
আল জাজিরার বিশ্লেষণ 
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার চলমান সংঘাত নাটকীয় মোড় নিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত যুদ্ধবিরতির মাঝেও। যদিও ট্রাম্প সম্ভাব্য এই যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে এক ধরনের কূটনৈতিক বিজয় হিসেবে তুলে...
গত বিশ বছর ধরে মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধের সঙ্গে জর্জ ডব্লিউ বুশ নামটা জড়ানো ছিল। এখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চেষ্টা করছেন যেন এই যুদ্ধের সঙ্গে তাঁর নামও জড়ায়। ট্রাম্পের হোয়াইট হাউস ইরানের বিরুদ্ধে...
গাজীপুরের টঙ্গীতে চিরুনি অভিযান চালিয়ে ৬৯ জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আটক ব্যক্তিরা বেশিরভাগ চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অভিযোগে আটক হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার দুপুরে টঙ্গীর দুই...
এ টেস্টের চার ইনিংসে দুদলের ৪০ উইকেটের মধ্যে বোল্ড আউট ছিল ১৫টি। চলতি শতাব্দীতে যা এক টেস্টে সর্বোচ্চ বোল্ড আউটের ঘটনা। আগের রেকর্ডটি ছিল ১৩টি বোল্ডের, যা এ শতাব্দীতে এর আগে ৪ বার দেখা গেছে।
লোডিং...
পঠিতনির্বাচিত

এলাকার খবর

 
By clicking ”Accept”, you agree to the storing of cookies on your device to enhance site navigation, analyze site usage, and improve marketing.